বিজ্ঞাপন

নৌকা না পেয়ে হতাশ ২ ভাণ্ডারি

December 17, 2023 | 8:43 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে ভোটে লড়ার জন্য নৌকা প্রতীকের আশায় উন্মুখ ছিলেন দুই রাজনৈতিক দলের দুই প্রধান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি ও সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ আল মাইজভাণ্ডারি। নজিবুল বশর ১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশন এবং সাইফুদ্দিন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান। ব্যাপক আলোচনার মধ্যে আওয়ামী লীগ শেষপর্যন্ত তাদের কাউকেই নৌকা প্রতীক দেয়নি। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা এ দুই ভাণ্ডারি ও তাদের অনুসারীরা।

বিজ্ঞাপন

এ অবস্থায় সুপ্রিম পার্টি নির্বাচনে থাকবে না কি বর্জন করবে সে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠক আহ্বান করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের কথা বলে নজিবুল বশরের দল নির্বাচনের মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দু’দফায় নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি। একসময়ের আওয়ামী লীগ নেতা মাইজভাণ্ডারি ১৯৯১ সালে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু সংসদ সদস্য থাকাকালীন মাঝপথে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি ত্যাগ করে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন গঠন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে ভিড়েন নজিবুল বশর।

নজিবুল বশরের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ আল মাইজভাণ্ডারি। নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি গড়ে তোলেন এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনও পান।

বিজ্ঞাপন

তরীকত ফেডারেশন ৪২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সুপ্রিম পার্টি ১৩০টি আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে ৮৫ জনের প্রার্থিতা টেকাতে পেরেছে। তবে মাইজভাণ্ডারির এ দুই বংশধরের মধ্যে নজিবুল বশর চেয়েছিলেন নৌকা প্রতীকে তৃতীয়বারের মতো ভোটের মাঠে লড়তে। অন্যদিকে সাইফুদ্দিন চেয়েছিলেন চাচাকে টেক্কা দিয়ে নৌকা প্রতীক হাতিয়ে নিতে।

কিন্তু আওয়ামী লীগ এবার ১৪ দলের শরিকদের জন্য মাত্র সাতটি আসনে ছাড় দিয়েছে, যাদের প্রত্যেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ তিনটি করে এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি-জেপি একটি আসনে নির্বাচন করবেন।

চট্টগ্রাম-২ আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। নজিবুল বশর এবং সৈয়দ সাইফুদ্দিন ছাড়াও এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করা আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম আবু তৈয়বও।

বিজ্ঞাপন

নৌকা না পাওয়ায় হতাশার কথা জানিয়ে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার দল ১৪ দলের শরিক। মেনন, ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর চেয়ে আমার অবদান দেশ ও সরকারের জন্য কোনো অংশে কম নয়। এবারের নির্বাচনে আমাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমি চারবার এমপি ছিলাম। প্রত্যেকবার নৌকা প্রতীক নিয়ে জিতেছি। অবমূল্যায়নের পরও আমি মাঠে থাকব।’

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আমাকে মাঠে থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে সম্মান জানিয়ে আমিসহ তরীকত ফেডারেশনের ৪২ জন প্রার্থী আমরা নির্বাচন করবো। আমাদের নৌকা লাগবে না, দলের প্রতীক ফুলের মালা প্রতীক নিয়েই নির্বাচন করবো।’

সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ আল মাইজভাণ্ডারি সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই পরিস্থিতি আমাদের জন্য হতাশাজনক। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আমাদের কয়েকবার বৈঠক হয়েছিল। আমাদের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত হোপফুল কিছু হলো না। এখন নির্বাচনে থাকবো কী থাকবো না- সেই সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে। আমাদের পার্টির স্থায়ী পরিষদের মিটিং হবে আগামীকাল (সোমবার)। নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকবো না কি সরাসরি বর্জন করবো না কি নির্বাচন করবো- সেই সিদ্ধান্ত আগামীকাল হবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন