জাপাকে যে ২৬টি আসন ছাড়ল আ.লীগ [তালিকাসহ]

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে ২৬ আসনে সমঝোতা হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে চাওয়া আরও বেশি থাকলেও আওয়ামী লীগ এর বেশি আসন দিতে রাজি হয়নি।

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের জন্য ২৫টি আসন থেকে দলীয় প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

এ ছাড়া একটি আসনে আগে থেকেই তারা কোনো প্রার্থী দেয়নি, যে আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫)। সব মিলিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার কারণে ২৬ আসনে প্রার্থী রাখছে না আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুন- ৩৭ আসনে নেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী

জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের জন্য দলীয় যে ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা আওয়ামী লীগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে তার মধ্যে ৯টিই রংপুর বিভাগের। আসগুলো হলো— ঠাকুরগাঁও-৩ (আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. ইমদাদুল হক, জাপার হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ), নীলফামারী-৩ (আওয়ামী লীগের মো. গোলাম মোস্তফা, জাপার রানা মোহাম্মদ সোহেল), নীলফামারী-৪ (আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন বাবুল, জাপার আহসান আদেলুর রহমান), রংপুর-১ (আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম রাজু, জাপার হোসেন মকবুল শাহরিয়ার), রংপুর-৩ (আওয়ামী লীগের তুষার কান্তি মণ্ডল, জাপার জি এম কাদের), কুড়িগ্রাম-১ (আওয়ামী লীগের আছলাম হোসেন সওদাগর, জাপার এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান), কুড়িগ্রাম-২ (আওয়ামী লীগের মো. জাফর আলী, জাপার পনির উদ্দিন আহমেদ), গাইবান্ধা-১ (আওয়ামী লীগের আফরুজা বারী, জাপার শামীম হায়দার পাটোয়ারী) এবং গাইবান্ধা-২ (আওয়ামী লীগের মাহবুব আরা বেগম গিনি, জাপার মো. আব্দুর রশিদ সরকার)।

রাজশাহী বিভাগের বগুড়া-২ ও বগুড়া-৩ আসনেও জাতীয় পার্টির জন্য নিজেদের প্রার্থী প্রত্যাহার করেছে আওয়ামী লীগ। প্রথম আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন তৌহিদুর রহমান মানিক, জাপার শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। অন্যদিকে বগুড়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন মো. সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, এই আসনে জাপার প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম তালুকদার। খুলনা বিভাগে কেবল সাতক্ষীরা-২ আসনে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবুর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছে। এই আসনে জাপার প্রার্থী মো. আশরাফুজ্জামান।

আরও পড়ুন- ১৪ দল ও জাতীয় পার্টিকে ৩২ আসনে আওয়ামী লীগের ছাড়

বরিশাল বিভাগে জাপাকে দেওয়া আওয়ামী লীগের আসন তিনটি। এর মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনে জাপার বি এম রুহুল আমীন হাওলাদারের জন্য প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা হয়েছে আওয়ামী লীগের মো. আফজাল হোসেনের। বরিশাল-৩ আসনে জাপার গোলাম কিবরিয়া টিপুর জন্য প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগের সরদার মো. খালেদ হোসেন। আর পিরোজপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আশরাফুর রহমান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এই আসনে জাপার প্রার্থী মো. মাশরেকুল আজম (রবি)।

ময়মনসিংহ বিভাগে ময়মনসিংহ জেলাতেই দুটি এবং ঢাকা বিভাগে তিনটি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আসনগুলো হলো— ময়মনসিংহ-৫ (আওয়ামী লীগের আব্দুল হাই আকন্দ, জাপার সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি), ময়মনসিংহ-৮ (আওয়ামী লীগের মো. আব্দুছ ছাত্তার, জাপার ফখরুল ইমাম), কিশোরগঞ্জ-৩ (আওয়ামী লীগের নাসিরুল ইসলাম খান, জাপার মজিবুল হক), মানিকগঞ্জ-১ (আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম, জাপার জহিরুল আলম রুবেল) এবং ঢাকা-১৮ (আওয়ামী লীগের হাবিব হাসান, জাপার শেরীফা কাদের)।

এ ছাড়া সিলেট বিভাগে একটি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চারটি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির জন্য। আসনগুলো হলো— হবিগঞ্জ-১ (আওয়ামী লীগের ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরী, জাপার মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম চৌধুরী), ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আওয়ামী লীগের শাহজাহান আলম, জাপার মো. আব্দুল হামিদ), ফেনী-৩ (আওয়ামী লীগের আবুল বাশার, জাপার মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী), চট্টগ্রাম-৫ (আওয়ামী লীগের আবদুস সালাম, জাপার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ) এবং চট্টগ্রাম-৮ (আওয়ামী লীগের নোমান আল মাহমুদ, জাপার সোলায়মান আলম শেঠ)।

এই ২৫টি আসনের বাইরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আগে থেকেই প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। আসনটিতে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমান। তাকে ছাড় দেওয়ার জন্যই এই আসনে আওয়ামী লীগ পরেও আর কোনো প্রার্থী দেয়নি। সব মিলিয়ে ২৬টি আসনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে দলটির সমঝোতা চূড়ান্ত হলো।

রোববার নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের প্রত্যাহার করে নেওয়া প্রার্থীর তালিকা জমা দেন ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। তিনি জানান, জাতীয় পার্টিকে যেসব আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে এসব আসনে নৌকার কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।

জাতীয় পার্টির জন্য আওয়ামী লীগের প্রত্যাহার করে নেওয়া প্রার্থীদের তালিকা দেখুন এখানে—

সারাবাংলা/জিএস/এনআর/টিআর