বিজ্ঞাপন

সমঝোতায় বাদ পড়লেন জাপার ‘হেভিওয়েট’ ৬ নেতা

December 17, 2023 | 7:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আসন সমঝোতা নিয়ে দর কষাকষির চেষ্টা করেছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। ১০০ থেকে নেমে ৫০, এবং শেষ পর্যন্ত ৩৫টি আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছাড় চেয়েছিল দলটি। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ২৬টি আসনে ছাড় দিতে সম্মত হয়েছে। তাতে দলের ‘হেভিওয়েট’ ছয় নেতা বাদ পড়েছেন সমঝোতার হিসাব থেকে।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় পার্টির ‘হেভিওয়েট’ যে ছয় নেতা সমঝোতা থেকে বাদ পড়েছেন তারা হলেন— কাজী ফিরোজ রশিদ, সালমা ইসলাম, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, পীর ফজলুর রহমান, লিয়াকত হোসেন খোকা ও নাসরীন জাহান রত্না আমিন। এর মধ্যে সালমা ইসলাম একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। বাকি পাঁচজনই নিজ নিজ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য।

গত কয়েকদিন ধরেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে আওয়ামী লীগের। সবশেষ গতকাল শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ ২৬টি আসন দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়। তবে এদিন কোনো দলের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

আরও পড়ুন- জাপাকে যে ২৬টি আসন ছাড়ল আ.লীগ [তালিকাসহ]

বিজ্ঞাপন

শেষ পর্যন্ত আজ রোববার (১৭ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রত্যাহার করে নেওয়া প্রার্থীদের তালিকা জমা দেয় আওয়ামী লীগ। ওই তালিকাতেই ২৬ আসনে জাপাকে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়।

আসন সমঝোতায় বাদ পড়া জাপার বর্ষীয়ান নেতা কাজী ফিরোজ রশিদ ঢাকা-৬ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ এবার মনোনয়ন দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনকে।

আরও পড়ুন- ৩৭ আসনে নেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী

বিজ্ঞাপন

জাতীয় পার্টির আরেক নেতা সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা প্রার্থী হয়েছিলেন তার বর্তমান আসন ঢাকা-৪ আসনে। এই আসনে এবার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে সানজিদা খানমকে।

বর্তমান সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম ঢাকা-১ ও ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালমান এফ রহমান, ঢাকা-১৭ আসনে মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তাদের কারও প্রার্থিতাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাহার করেনি। তবে সালমা ইসলাম ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করবেন।

আরও পড়ুন- ১৪ দল ও জাতীয় পার্টিকে ৩২ আসনে আওয়ামী লীগের ছাড়

এদিকে বর্তমান সংসদীয় আসন বরিশাল-৬ থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রত্না। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল হাফিজ মল্লিক।

বিজ্ঞাপন

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকা একই আসনে প্রার্থী হয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে আব্দুল্লাহ-আল-কায়সারকে।

জাতীয় পার্টির ‘হেভিওয়েট’ আরেক নেতা পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ তার বর্তমান আসন সুনামগঞ্জ-৪ থেকে প্রার্থী হয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে সাবেক আমলা মোহাম্মদ সাদিককে।

আরও পড়ুন- জাতীয় পার্টির ‘বঞ্চিতদের’ নির্বাচন বর্জনের চাপ

শেষের এই তিন আসনেও আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থীকে প্রত্যাহার করেনি। সব মিলিয়ে বর্তমান সংসদে জাতীয় পার্টির এই ছয় সংসদ সদস্যকে ভোটের মাঠে লড়াই করতে হবে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তো আছেনই।

এর বাইরেও আরও কয়েকজন নেতার জন্য আওয়ামী লীগের কাছে আসন সমঝোতার জন্য দেনদরবার করেছে জাতীয় পার্টি। তাদের মধ্যে রয়েছেন— অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঞা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩), জাহিদ হাসান (লালমনিরহাট-৩), মোস্তফা আল মাহমুদ (জামালপুর-২), জহিরুল ইসলাম জহির (টাঙ্গাইল-৭), মো. জসীম উদ্দীন ভূঁইয়া (নেত্রকোনা-৩), মাহমুদুর রহমান মাহমুদ (লক্ষ্মীপুর-১), অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম (মুন্সিগঞ্জ-১), মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল (রংপুর-৪), আবু সালেক (পঞ্চগড়-১), আতাউর রহমান আতা (গাইবান্ধা-৫), লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তসলিম হোসেন (নীলফামারী-১)। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের কারও ভাগ্যেই সমঝোতার শিঁকে ছেড়েনি।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন