‘বাংলাদেশকে নিজস্ব সম্পদনির্ভর পরিকল্পনা করতে হবে’
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:২২ | আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৩:৪৮
ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশকে নিজস্ব-সম্পদ নির্ভর পরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, বাকু সম্মেলনে সর্বাধিক জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর নতুন জলবায়ু অর্থায়নের (এনসিকিউজি) পরিমাণ ও কর্মকাঠামো সুনির্দিষ্ট করার দাবি থাকলেও প্রশমন ও অভিযোজন তহবিলের ভারসাম্যহীনতা দূর, ক্ষয়-ক্ষতি তহবিল বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক ক্ষয়-ক্ষতির অন্তর্ভুক্তির বিষয়গুলো সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। তাই সরকারকে নিজস্ব উদ্যোগ নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘কপ-২৯ ফলাফল: বাংলাদেশকে স্ব-নির্ভর জলবায়ু পরিকল্পনা করতে হবে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা।
ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন মাসুম, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, ইক্যুইটিবিডি’র আমিনুল হক, ওয়াটারকিপার্সের শরিফ জামিল, কোস্ট ফাউন্ডেশনের মো. আবুল হাসান প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, কপ সম্মেলন থেকে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা বিপদাপন্ন দেশগুলোর ন্যূনতম ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের চাহিদার তুলনায় খুবই কম। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠার সক্ষমতা অর্জনের চাহিদা মেটাতে মোটেই যথেষ্ট নয় বরং এটি জলবায়ু অর্থায়নের নামে ঋণ নির্ভরতা বাড়াবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিজেদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেবে।
ভবিষ্যৎ জলবাযু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশেকে তার নিজস্ব সম্পদ নির্ভর জলবায়ু পরিকল্পনা তৈরির ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘কপ-২৯ তে উন্নত দেশগুলো কৌশলে বৈশ্বিক ১.৫ ডিগ্রী তাপমাত্রার লক্ষ্যমাত্রা থেকে সরে আসছে। উন্নত দেশগুলো প্যারিস চুক্তির শর্তগুলো থেকে সরে গিয়ে সকল দায়বদ্ধতা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা জলবায়ু তহবিল প্রক্রিয়ায় উন্নয়নশীল দেশকে শোষণ ও আধিপত্ত বিস্তার করতে নব্য উদারনীতিবাদ নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করছেন। তাই আগামী সম্মেলনে জলবায়ু সম্মেলনে তহবিল পেতে আমাদের উপনিবেশিক ব্যবস্থাকে পরিবর্তনে সংগ্রাম করতে হবে।’
সাংবাদিক কাওসার রহমান বলেন, ‘ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিলের নামে উন্নত বিশ্ব আমাদের ফাঁদে ফেলছে। আমরা যদি বেসরকারি খাত এবং বহুপাক্ষিক ব্যাংকগুলোকে এই প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করি, তাহলে আমরা আরো ফাঁদে পরবো। উন্নত দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়নের নামে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে এবং উন্নত দেশগুলো কৌশলে তাদের দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।’
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো তাদের পরিকল্পনা ঋণ নির্ভর ও পরামর্শের ভিত্তিতে করছে, যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য বিপদজ্জনক। ডেলটা প্লান-২০৩০ তার একটি উদাহরণ, যা আমাদের নিজস্ব জ্ঞান ও সম্পদের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।’
সরকারকে সকল জলবায়ু সম্পর্কিত অথবা উন্নয়ন পরিকল্পনা পর্যালোচনার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এসডব্লিউ