নারায়ণগঞ্জে তালাবদ্ধ ঘরে পাওয়া মরদেহের পরিচয় মিলেছে
২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৬
নারায়ণগঞ্জ: জেলার ফতুল্লায় একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া যুবকের মরদেহের পরিচয় মিলেছে। মরদেহটি অপহৃত ভ্যানচালক হাবিবুর রহমানের (২১)।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে এনায়েতনগর ইউনিয়নের শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাড়ি থেকে অপহরণের পাঁচ দিন পর নিহতের গলিত ও বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের বাবা আজিজুল হক ছেলের পরনের জামা-কাপড় ও পায়ের আঙুল দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন।
জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অপহরণকারী দলের দুই সদস্য কয়েকদিন আগে স্বপন সরকারের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন। সেখানেই তারা হাবিবুর রহমানকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে টাকা না পেয়ে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায় তারা।
এর আগে, শনিবার (২৫ জানুয়ারি) হাবিবুরের বাবা আজিজুল হক তার ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তাদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার দিঘল হাইল্লা গ্রামে। তবে তারা স্বপরিবারে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সাক্কু মিয়ার বাসায় ভাড়া থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিহত হাবিবুর এক মাস আগে গ্রাম থেকে বাবার কাছে আসেন এবং ভ্যান চালানো শুরু করেন।
গত ২৪ জানুয়ারি অপহরণকারীরা হাবিবুর রহমানের মোবাইল দিয়ে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
নিহতের বাবা আজিজুল হক বলেন, ‘আমি ও আমার ছেলে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই, এতো টাকা কোথায় পাব?’ এরপর থেকেই অপহরণকারীরা হাবিবুরের মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
পরদিন আজিজুল হক থানায় ছেলে অপহরণ অভিযোগ করেন।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা, ফতুল্লা মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ওয়াসিম জানান, ‘প্রযুক্তির মাধ্যমে হাবিবুরের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে মোবাইল বন্ধ থাকায় সময় লেগেছে।’
এই প্রসঙ্গে নিহতের বাবা আজিজুল হক বলেন, ‘অভিযোগ করার পর পুলিশ যদি তৎপরতা বাড়াতো, তাহলে হয়তো আমার ছেলে বেঁচে যেত। আমরা গরিব মানুষ, পরিশ্রম করে খাই। তারপরও অপহরণকারীরা আমার ছেলেকে হত্যা করল।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘ফতুল্লায় অপহরণকারী একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তারা সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। পুলিশ বিষয়টি জানে, কিন্তু ব্যবস্থা নেয় না। আমি এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘যে বাড়িতে লাশ পাওয়া গেছে, সেই বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়ার পরিচয় না জেনেই বাসা ভাড়া দিয়েছেন। ফলে হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে দেরি হয়েছে। তবে তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’
সারাবাংলা/এসডব্লিউ