Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিক্ষার্থীদের দাবি মানলেন ব্যবসায়ীরা, খুলছে দোকান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ এপ্রিল ২০২২ ০৯:০৩

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত দুইদিন ধরে চলা সংঘর্ষের শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি মেনে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকে পুনরায় দোকানপাট খুলবেন তারা।

বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় সাইন্স ল্যাবরেটরিতে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আলোচনায় অংশ নেওয়া ঢাকা কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি মাহবুব আলম।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে মাহবুব আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দোকানপাট খুলবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও স্বাভাবিকভাবে চলবে। শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি মেনে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। শিক্ষক ছাত্র ও ব্যবসায়ী মিলে একটি সেল গঠন করা হবে। পরবর্তী সমস্যা সমাধানে কাজ করবে এই সেল। সাংবাদিকসহ আহত সকলকে ক্ষতিপূরণ দেবে ব্যবসায়ী মালিক সমিতি।

এর আগে গত দুইদিন ধরে চলা সমস্যা সমাধানে গত বুধবার (২০ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টায় রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি (৪ জন), ব্যবসায়ী নেতারা, স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বুধবার দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত এই বৈঠক চলে।

এর আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কলেজে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দাবি-দাওয়া তুলে ধরে কথা বলেন ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুজয় বালা ও মাসুম বিল্লাহ।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো—

১. শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যাক্করজনক হামলার উসকানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে;

২. আহত সব শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব দায়ভার নিউমার্কেট ব্যবসাযয়ী সমিতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিতে হবে;

৩. হকারদের হামলায় নিহত পথচারী নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে;

৪. রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে;

৫. দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউমার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে;

৬. প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে;

৭. প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে;

৮. ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে;

৯. ক্রেতা হয়রানি, নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; এবং

১০. চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মাকের্টে ঢাকা কলেজের সম্পদ লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দিতে হবে।

সুজয় বালা ও মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমাদের এসব দাবি অনতিবিলম্বে কার্যকর করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এর আগে, সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাতে ও মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দিনভর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের দোকানের কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সংঘর্ষ বন্ধ হয়। এরপর বুধবার (২০ এপ্রিল) আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দুই দিন ধরে সংঘর্ষ ঘটলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে, মূলত দুই দোকানের কর্মচারীদের দ্বন্দ্ব থেকে শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। এক দোকানের কর্মচারী তার ঢাকা কলেজের কিছু ‘বন্ধু’কে নিয়ে এসে আরেক দোকানের কর্মচারীকে মারধর করেন। পরে দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে সোমবার রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি এবং মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই সংঘর্ষ আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

ঢাকা কলেজ নিউমার্কেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর