Thursday 05 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নাসিকে হার— তৈমুরের ‘কাঠগড়া’য় ইভিএম ও প্রশাসন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ জানুয়ারি ২০২২ ২০:৩৭ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২২ ০২:৪১

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে ৬৯ হাজারেরও বেশি ভোটে হেরেছেন হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার। যারা তাকে ভোট দিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে এই পরাজয়ের জন্য তিনি দায়ী করেছেন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ‘কারচুপি’ এবং ‘প্রশাসনিক ইঞ্জিনিয়ারিং’কে।

তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, জনগণকে আমি ধন্যবাদ জানাই। তারা আমাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। কিন্তু প্রশাসনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইভিএমের কারচুপির কারণে আমার এই পরাজয়।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৬ জানুয়ারি) রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নাসিক নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নিজের নির্বাচনি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তৈমুর এই প্রতিক্রিয়া জানান। ভোট ঘিরে বারবার তাকে ‘ডিস্টার্ব’ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, এবারের নির্বাচনে সাধারণ মানুষের দুইটি প্রশ্ন ছিল। আমি যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাই, আমাকে তারা জিজ্ঞাসা করেছেন— ‘আপনি কি বইসা যাবেন?’ আমি বলেছি, আমি বসব না। ২০১১ সালেও কিন্তু আমি বসিনি, দল আমাকে বসিয়ে দিয়েছিল। ওই সময় কুমিল্লার মেয়রকেও বসতে বলেছিল দল। কিন্তু তিনি বসেন নাই। পরে দল তাকে মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছে। এরপর আমি ২০১৬ সালে দল নমিনেশন দিলেও নির্বাচন করি নাই। এবারে করেছি।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় প্রশ্নটির কথা তুলে ধরে তৈমুর বলেন, আরেকটি কথা সবাই সবসময় জিজ্ঞসা করেছে— নির্বাচন সুষ্ঠু হবে তো? নির্বাচন কমিশনার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এলেন নারায়ণগঞ্জে। বললেন, ভোট সুষ্ঠু হবে। তারপর যখন ভোট শুরু হলো, আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি। প্রতিটি ঘটনা জানিয়েছি। কেউ বলতে পারবে না, আজ ফেল করে (নির্বাচনে পরাজিত হয়ে) এসে অভিযোগ করছি। কেননা, এখন যে ঘটনাগুলোর কথা বলব, সেগুলো সবসময় আমি আপাদের জানিয়েছি।

এসব ঘটনার মধ্যে মূলত নিজের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় ও পুলিশি হয়রানির অভিযোগগুলো তুলে ধরেন তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তার নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা বিএনপির নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও তার নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ধরপাকড় করেছে পুলিশ। তার গাড়িচালকের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অবহিত করলেও তার ড্রাইভিং লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। এসব বিষয় নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে বারবার বৈঠক করেও কোনো ফল মেলেনি— এমন অভিযোগই করেন তিনি।

তৈমুর আলম খন্দকার আরও বলেন, জয়দেব চন্দ্র মানিক আমার ঘনিষ্ঠ। তাকে ধরে নিয়ে মামলা দিয়েছে। সে নাকি হেফাজত করে। হিন্দুরাও নাকি হেফাজত করে! এভাবে আমাকে বারবার ডিস্টার্ব করা হয়েছে। এমনকি আজকেও আমার কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরও বলছি, জনগণ আমাকে সবসময় সহযোগিতা করেছে। সর্বাত্মক সহযোগিতা জনগণ আমাকে করেছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই।

নিজের পরাজয়ের পেছনে কারচুপির অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বলেন, ভোটকেন্দ্রে মেশিন (ইভিএম) বারবার হ্যাং হয়েছে। ভোটাররা বাইরে দাঁড়িয়েছিল। তারা ঠিকমতো ভোট দিতে পারেনি। ভোটাররা আমার পক্ষে ছিল। কিন্তু প্রশাসনিক ইঞ্জিনিয়ারিং আর ইভিএমের কারচুপির জন্য আমার এই পরাজয়।

পাশে থাকার জন্য জনগণকে আবারও ধন্যবাদ জানিয়ে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই জনগণকে। একইসঙ্গে মিডিয়াকেও ধন্যবাদ জানাই। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। সবার জন্য দোয়া রইল।

এর আগে, রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নাসিকে ১৯২টি কেন্দ্রে একটানা ভোট নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এই নির্বাচনের বেসরকারি ফল ঘোষণা করা হয়। বেসরকারি ফলে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭ ভোট। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার হাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৬২ ভোট।

সারাবাংলা/টিআর

টপ নিউজ ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী তৈমুর আলম খন্দকার নাসিক নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর