বিজ্ঞাপন

আন্দোলনকারীরা ঘৃণ্য কাজ করেছে: প্রধানমন্ত্রী

July 17, 2018 | 1:55 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: কোটা আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসা ভাঙচুর-লুটপাট করে ঘৃণ্য কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মাস তিনেক আগে সংঘটিত ওই হামলার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) গণভবনে এ মন্তব্য করেন। এদিন তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভাতা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা রাখতে উচ্চ আদালতের রায় আছে। সরকার চাইলেই তা পরিবর্তন করতে পারবে না। এ নিয়ে কমিটি কাজ করছে।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বিসিএস দেয় তারা কি মেধাবী নয়? তারা সকলেই তো মেধাবী। আর মেধাবী ছাড়া কি কেউ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে পারে? পরীক্ষা তো যথেষ্ট কঠিন। বিশেষ করে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া তো কেউ এই পরীক্ষা দিতে পারে না। এই পরীক্ষা দিয়ে পাশ করা অত্যন্ত মেধাবী হলে তারা পাশ করতে পারে এবং তারপরে তারা চাকরি পায়।’

আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরা (আন্দোলনকারী) এমন কী মেধাবী হয়ে গেল যে যারা পরীক্ষা দিচ্ছে, পাশ করছে তারা মেধাবী নয়? এ ধরনের কথা-বার্তা এরা বলে কীভাবে? এ নিয়ে হঠাৎ আন্দোলনে যাওয়ারই বা কী দরকার আছে? সেটা আমরা বুঝি না! আর আন্দোলন করলে আন্দোলন করবে, কিন্তু সেখানে ভাঙচুর করা, ভিসির বাড়ি আক্রমণ করা, সেখানে ভিসি পরিবার লুকিয়ে কোনোমতে জীবন বাঁচিয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। আমরাও আন্দোলন করেছি। দেখেছি খুব বেশি হলে ভিসির বাড়ির একটা ফুলের টব ভাঙা হতো। কিন্তু কখনো ছাত্র-ছাত্রীরা এটা চিন্তাও করতে পারেনি যে, তার বাড়ির মধ্যে ঢুকে গাড়িতে আগুন দেবে, ভাঙচুর করা, বেডরুম পর্যন্ত ঢুকে গিয়ে লুটপাট করা, চুরি করা… এ ধরনের জঘন্য কাজ কোনো শিক্ষার্থী করতে পারে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে। এরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এটা আরও লজ্জার। কারণ আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের মহান আত্মত্যাগে স্বাধীনতা, সেই মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানীত। তাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। আমি জানি ভাতা দিয়ে সম্মান দেওয়া যায় না। তবে আমি চাই না তাদের কেউ কখনো কষ্ট পান।’

বিজ্ঞাপন

উচ্চ আদালতের রায়ের পরও শিক্ষকসহ সমাজের জ্ঞানীরা কোটা আন্দোলনকারীদের কী করে সমর্থন দিচ্ছেন, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি মানবতাবিরোধীরা যেন রাষ্ট্র পরিচালনা ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে না আসতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা প্রদান কার্যক্রম চালু হওয়ার ফলে এখন থেকে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী কারও কাছ থেকে কমিশন নিতে পারবে না।’

প্রথম পর্যায়ে মঙ্গলবার থেকে এক লাখ ১৫ হাজার উপকারভোগী তাদের গত এপ্রিল-জুন সময়কালের ভাতাসমূহ ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাবেন।

সক্ষম উপকারভোগীরা যেন সরকারি সহায়তার পাশাপাশি কাজকর্মে নিয়োজিত থাকেন সে বিষয়ে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, জনগণ চাইলে আগামীতে তার দল আবারও ক্ষমতায় আসবে, তবে বিভিন্ন প্রকার ভাতা, স্বাস্থ্য সেবা, আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীনদের ঘরবাড়ি করে দেওয়াসহ জনকল্যাণমূলক কাজগুলো চালিয়ে নেওয়াই তার সরকারের লক্ষ্য।

বিজ্ঞাপন

প্রথম পর্যায়ে গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপকারভোগীরা এ সুবিধা পাবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী এসব এলাকার উপকারভোগীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থ বছরে আরো ১০টি জেলার উপকারভোগীদের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে ভাতা বিতরণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।পরবর্তীতে সরাসরি ভাতাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ৬৬ লাখে উন্নীত হবে বলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান।

এ সময় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোজাম্মেল হক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী  ‍নুরুজ্জামান আহমেদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন