July 17, 2018 | 5:05 pm
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে ভাঙচুর-হামলার ঘটনার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরাও আন্দোলন করেছি। খুব বেশি হলে ভিসির বাড়ির ফুলের টব ভাঙা হতো। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ির মধ্যে ঢুকে গাড়িতে আগুন দেওয়া, ভাঙচুর করা, বেডরুম পর্যন্ত ঢুকে গিয়ে লুটপাট করা, চুরি করা… এ ধরনের জঘন্য কাজ কোনো শিক্ষার্থী করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিসিএস দেয় তারা কি মেধাবী নয়? তারা সকলেই তো মেধাবী। আর মেধাবী ছাড়া কি কেউ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে পারে? পরীক্ষা তো যথেষ্ট কঠিন। বিশেষ করে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া তো কেউ এই পরীক্ষা দিতে পারে না। এই পরীক্ষা দিয়ে পাশ করা অত্যন্ত মেধাবী হলে তারা পাশ করতে পারে এবং তারপরে তারা চাকরি পায়।’
আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এরা (আন্দোলনকারী) এমন কি মেধাবী হয়ে গেলো যে যারা পরীক্ষা দিচ্ছে, পাশ করছে তারা মেধাবী নয়? এ ধরনের কথা-বার্তা এরা বলে কীভাবে? এ নিয়ে হঠাৎ আন্দোলনে যাওয়ারই বা কী দরকার আছে? সেটা আমরা বুঝি না! আর আন্দোলন করলে আন্দোলন করবে, কিন্তু সেখানে ভাঙচুর করা, ভিসির বাড়ি আক্রমণ করা, সেখানে ভিসি পরিবার লুকিয়ে কোনোমতে জীবন বাঁচিয়েছে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে। এরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এটা আরও লজ্জার। কারণ আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।’
আর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের মহান আত্মত্যাগে স্বাধীনতা, সেই মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিত। তাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। আমি জানি ভাতা দিয়ে সম্মান দেওয়া যায় না। তবে আমি চাই না তাদের কেউ কখনো কষ্ট পান।’
উচ্চ আদালতের রায়ের পরও শিক্ষকসহ সমাজের জ্ঞানীরা কোটা আন্দোলনকারীদের কী করে সমর্থন দিচ্ছেন, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি মানবতাবিরোধীরা যেন রাষ্ট্র পরিচালনা ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে না আসতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
আল্লাহ ও জনগণ চাইলে আবার ক্ষমতায় আসব: সামনে আবার নির্বাচন। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে জনগণের ওপর। জনগণ যদি নৌকায় ভোট দেয় তাহলে আবার ক্ষমতায় আসব। না দিলে আসব না। আর এটা আল্লাহর ওপরও নির্ভর করে। আল্লাহ যদি দেন ও জনগণের যদি ভোট পাই তাহলে আসব, না হলে আসব না। কিন্তু আমি তার আগে আমার কাজগুলো সুরক্ষিত করতে চাই। যেন আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
এ সময় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোজাম্মেল হক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে
আরও পড়ুন
আন্দোলনকারীরা ঘৃণ্য কাজ করেছে : প্রধানমন্ত্রী