বিজ্ঞাপন

একমাত্র লক্ষ্য জনগণের উন্নত জীবন : প্রধানমন্ত্রী

March 21, 2018 | 4:28 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম ব্যুরো

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনাদের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। যেভাবে আমার পিতা আপনাদের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়েও আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে আপনাদের সুন্দর জীবন দেবো।

বুধবার (২১মার্চ) বিকেলে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তার আগে আগে নেভাল একাডেমিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আবক্ষ প্রতিকৃতি ভাস্কর্য এবং বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন। এরপর চট্টগ্রামে নেভাল একাডেমিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ডের ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

সকাল পৌনে ১১টায় হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ নৌঘাঁটিতে পৌঁছে নেভাল একাডেমির কর্মসূচিতে যোগ দেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিনের সভাপতিত্বে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই এই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। এদেশ স্বাধীন করেছেন আমার বাবা। স্বাধীন বাংলাদেশ উন্নত হবে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ পেটভরে ভাত খাবে। প্রতিটি মানুষের বাসস্থান হবে। প্রতিটি মানুষ চিকিৎসা ও শিক্ষা পাবে। প্রতিটি মানুষ উন্নত সুন্দর জীবন পাবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কাজ করি। আমার জীবনে কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই।

তিনি বলেন, ‘আমার একটাই লক্ষ্য, আমার বাংলার মানুষ শহর থেকে একেবারে গ্রাম পর্যন্ত যে মানুষগুলো বসবাস করে তারা সুন্দর জীবন পাবে। উন্নত জীবন পাবে। সুন্দরভাবে বাঁচবে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে  দোয়া ও  আর্শীবাদ চাই। আমার রাজনীতি হল জনগণের কল্যাণের জন্য। আমার রাজনীতি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আমার রাজনীতি- যে দেশের মানুষকে আমার পিতা উন্নত জীবন দিতে চেয়েছিলেন, সেই উন্নত জীবন দেওয়া। এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমি আপনাদের কাছে ভোট চাই। আপনারা যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেন আমরা আপানদের উন্নয়ন দিতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি আগামীতে ক্ষমতায় আসি, আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকবে। কাজেই একমাত্র নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের উন্নতি হবে। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আগামীতে আবার ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেবন কি না? আমাকে হাত তুলে ওয়াদা করেন।

জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের কাছ থেকে সবসময় সহযোগিতা পেয়েছি। স্বজন হারানো বেদনা নিয়ে আপনাদের মাঝেই ফিরে এসেছি। হারানো বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ খুঁজে পেয়েছি।  কাজেই আপনাদের জন্য আমি যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। যেভাবে আমার পিতা আপনাদের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়েও আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে আপনাদের সুন্দর জীবন দেব।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের দুঃসাশনের চিত্র তুলে শেখ হাসিনা বলেন, তারা বাংলাদেশের ভাবমূতি নষ্ট করেছে। বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের দেশ হিসেবে পরিণত করেছিল। এই চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়েছে। অস্ত্র পাচারের ব্যবসার সাথে জড়িত কে? ওই খালেদা জিয়ার ছেলে। আজকে সে শাস্তি পেয়েছে। তার সাজা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী থাকার অবস্থায় খালেদা জিয়া কালো টাকা সাদা করে। তার দুই ছেলে কালো সাদা করেছে। তার অর্থমন্ত্রী কালো টাকা সাদা করেছে। ক্ষমতায় থেকে এভাবে কালো টাকা আসে কিভাবে? তারা দুর্নীতি করে জনগণের টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

বিজ্ঞাপন

আর জঙ্গি-সন্ত্রাস-মাদকুমুক্ত সমাজ গড়তে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিজের সন্তানদের নিয়ে এ ব্যাপারে সচেতন ও সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অনেক কষ্ট ভোগ করেছে। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর দীর্ঘদিন এদেশের উন্নয়ন হয় নাই। আমি গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেই নাই। খালেদা জিয়ার গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে দিল। আমেরিকা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলো। ২০০১সালে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেয় নাই।

আমরা, আওয়ামী লীগ দেশে শান্তি চাই। মানুষের উন্নতি চাই। একটা দেশের উন্নতি করতে হলে শান্তি প্রয়োজন। এই দেশে শান্তিপূর্ণ হোক, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আওয়ামী লীগ কাজ করে।

যেকোন কাজ নিজের উদ্যোগ নিয়ে করলে কিন্তু নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। সেই সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এই দেশ জাতির পিতা স্বাধীন করে গেছেন। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উঠতে পেরেছি। বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলতে পারি। কারও কাছে হাত পেতে নয়। কেউ অপবাদ দিতে পারবে না।

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছিল বিশ্বব্যাংক মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলাম নিজের অর্থে আমরা পদ্মা সেতু করবো। যেই কথা বলেছিলাম, সেই কথা রেখেছি। আজকে দেশ উন্নত হয়েছে। আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে তার স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে আর কেউ অবহেলা করতে পারবে না।

আওয়ামী লীগ আসলে উন্নয়ন হয়। আর যখন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিল। তারা কি করেছে? মানুষ হত্যা করেছে। তাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পায় নাই।

২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নি-সন্ত্রাসের কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার নির্দেশে বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ৫ শ-এর উপর মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল খালেদা জিয়া, বিএনপি এবং জামায়াত মিলে। কোনো মানুষ কখনো এভাবে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে না। যার মধ্যে এতোটুকু মনুষ্যত্ব আছে, তারা পারে না। কিন্তু ওরা কোনো মানুষ না।

মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কারণেই আজকের বাংলাদেশ। এই কথাটা ভুললে চলবে না। সে কারণে আমরা তাদের সুযোগ সুবিধা দেই। দেশ স্বাধীন না হলে কারো চাকরিই হতো না। কেউই চাকরিও পেত না বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

সারাবাংলা/এনআর/আরডি/এমআই

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন