বিজ্ঞাপন

থলের বিড়াল আটকে রাখতে পারলেন না সিইসি: রিজভী

March 9, 2019 | 1:55 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) থলের বিড়াল আর আটকে রাখতে পারলেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘ইভিএম চালু হলে ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির ঝুঁকি কমবে’— প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রিজভী বলেন, ‘প্যান্ডোরার বাক্স থেকে এখন আসল ঘটনাগুলো বের হতে শুরু করেছে। থলের বিড়ালকে আর বেশিদিন আটকে রাখতে পারলেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। আসলে সত্যকে ঢেকে রাখলেও তাতে লাভ হয় না। সত্য কুহেলিকার আচ্ছাদন ভেদ করে বের হবেই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘মিডনাইট নির্বাচনের আসল সত্যটি সিইসি মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া দস্যুতারই নামান্তর। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সেই দস্যুতার আচরণ করেছেন সিইসি।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘জনগণের হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম মেশিন প্রকল্প অপরিহার্যতা প্রতিপাদন করার জন্যই কি সিইসি ২৯ ডিসেম্বর রাতে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন? একটি প্রকল্পের যথার্থতা প্রমাণের জন্যই কি সারাদেশের ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নিলেন? আপনার ব্রেইন চাইল্ড প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের আমানতকে আপনি কেড়ে নিলেন?

তিনি বলেন, ‘আজ আপনার এবং আপনার সহচরদের মুখ দিয়েই আসল সত্যটি প্রকাশ হতে শুরু করেছে। অথচ আপনি ৩০শে ডিসেম্বরের রাত থেকেই সুষ্ঠু নির্বাচনের ঝুড়ি ঝুড়ি গালগল্প শুনিয়েছেন মানুষকে। মিডনাইট নির্বাচনের হোতা আপনি। আদর্শগত শূন্যতার কারণে আপনি এতো বড় অন্যায়টি করেছেন। অবৈধ সরকারের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতি বাস্তবায়ন করতেই আপনি মহাভোট কেলেঙ্কারির মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করলেন।’

বিজ্ঞাপন

‘আপনার এই বক্তব্যটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে থাকলো জাতির কাছে। আপনি ২৯ ডিসেম্বর রাতে স্বচ্ছ জালিয়াতি ও মহাকারচুপির ভোট সেরে ফেলেছেন। মনে রাখবেন-পাপ কখনও বাপকেও ছাড়ে না। জনতার কাছে আপনাকে জবাবদিহি করতেই হবে’— বলেন রিজভী।

দেশ এক ব্যতিক্রমী দু:শাসনের মধ্যে নিপতিত হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধ্বজাধারীরা সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারের আলোবাতাসহীন অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি করে রেখেছে। আর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে জাতীয় সংসদে অনুগত বিরোধী দলীয় নেতা বানানো হয়েছে।’

‘স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রীকে রাখা হয়েছে পরিত্যক্ত কারাগারের স্যাঁতসেতে প্রকোষ্ঠে। আর মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার রিক্রুটমেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত ডিসি-কে করা হয়েছে নানাভাবে পুরস্কৃত। তাকে কখনও মন্ত্রী বা কখনও এমপি বানানো হয়েছে’— অভিযোগ রিজভীর।

তিনি বলেন, ‘রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের স্ত্রীকে প্রতিহিংসাবশত কারাগারে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। আর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেও শুধুমাত্র ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের আত্মীয় হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন মন্ত্রী ও এমপি করা হয়েছে অনেককেই। অথচ সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকারটুকুও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত পরশু অনুষ্ঠিত ঢাকা আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, ‘নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে একতরফাভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে আওয়ামীপন্থী আইনজীবী মোখলেসুর রহমানকে। দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের দিন প্রচণ্ড রকম মারধর করা হয়েছে বিএনপির প্যানেল কমিশনারকে। তাছাড়া সাত দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন নজীরবিহীন। ব্যাপকভাবে জালভোট প্রদানের উদ্দেশ্য নিয়েই দ্বিতীয় দফা নির্বাচন সাত দিনের ব্যবধান করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনেও মিডনাইট ভোটের পদ্ধতি অবলম্বন করছে। সাধারণ জনগণের মতো বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতারাও এখন বঞ্চিত ও লাঞ্ছিত। প্রহসনের পর প্রহসন এবং তামাশার নানা অভিনবত্ব দেখছে দেশবাসী।’

সারাবাংলা/এজেড/জেএএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন