বিজ্ঞাপন

পদ্মায় রেল সংযোগে ঋণচুক্তি সই, চীন দিচ্ছে ২৫ হাজার কোটি টাকা

April 27, 2018 | 6:54 pm

।।জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে থাকা অর্থায়নে জটিলতা কেটে গেল। শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে এ চুক্তি সম্পন্ন হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা  মোট ব্যয় ধরা হয়েছে। এ চুক্তির মধ্যদিয়ে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা।

চীনের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০ টায় চীনা এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক এবং আর চীনা এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সান পিং।

বিজ্ঞাপন

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি কর্মকর্তারা ছাড়াও চীনে বাংলাদেশ দুতাবাসের ইকোনোমিক কাউন্সিলারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি করতে যাওয়া ছয় সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে থাকা ইআরডির যুগ্ম সচিব ড. একেএম মতিউর রহমানের বরাত দিয়ে ইআরডির সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ মাসুমা আখতার শুক্রবার বিকালে সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান,  চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ঋণের শর্ত গুলো হচ্ছে, পুরো ঋণটিই হবে প্রেফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট। এ ঋণের ক্ষেত্রে চীন দেবে ৮৫ শতাংশ অর্থ আর বাংলাদেশ সরকারকে দিতে হবে ১৫ শতাংশ অর্থ। এ ঋণে সুদের হার হবে ২ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ হবে ৬ বছরের রেয়াতকালসহ ২০ বছর। ব্যবস্থাপনা ফি থাকবে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ হারে। প্রতিশ্রুতি ফি দিতে হবে শূন্য দশমিক ২৫শতাংশ হারে। সেই সঙ্গে চুক্তি কার্যকর হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যেই ব্যবস্থাপনা ফি বাবদ ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার ৮৪৩ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার দিতে হবে চীনা এক্সিম ব্যাংককে।

বিজ্ঞাপন

২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংর বাংলাদেশ সফরের সময়ই পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে অর্থায়নে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। তবে নানা কারণে পরবর্তীতে অর্থায়ন নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। এজন্য চুক্তি স্বাক্ষরে বিলম্বিত হতে থাকে। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে এ প্রকল্পে চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। সেটি না হওয়ায় পরে ডিসেম্বরে চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী ছিলো ইআরডি। সেসময়ও চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ঋণ চুক্তির জন্য স্টেট কাউন্সিলের অনুমোদনের পর চীনের প্রেসিডেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন। আর সে কারণেই বিলম্বিত হতে থাকে প্রক্রিয়াটি।

এভাবে কেটে যায় আরও তিন মান। তবে চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে চিঠি চালাচালি এবং বৈঠক অব্যহত থাকে। এসব বৈঠকে ঋণের বিভিন্ন শর্তসহ নানা দিক চূড়ান্ত হওয়ায় সমঝোতা স্মারকের ১৮ মাস পর চুক্তিটি আলোর মুখ দেখলো।

প্রাথমিকভাবে ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পটি সমাপ্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ঋণচুক্তি বার বার পিছিয়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন সংশয়ের মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় শুক্রবার ঋণ চুক্তি হলেও প্রকল্পটির ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানো হবে বলেই আভাস দিয়েছেন ইআরডি সংশ্লিষ্টরা।

তারা জানান, এজন্য ইতিমধ্যেই প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

বিজ্ঞাপন

গত ২৪ এপ্রিল পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয় বলেও জানায় দায়িত্বশীল সূত্র।

উল্লেখ্য পদ্মার মূল সেতু বাস্তবায়নের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। সবশেষ হিসাবে সেতুর ৫৯ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/এমএম

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন