বিজ্ঞাপন

‘বঙ্গবন্ধু-১’ নিয়ে ছিল বিশ্বে সর্বাধুনিক রকেটটির প্রথম যাত্রা

May 13, 2018 | 5:31 pm

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

বাঙালি জাতির স্বাধীনতা যুদ্ধের অবিসংবাদিত মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকামী মানুষের শ্রদ্ধা ও সম্মানের ব্যক্তিত্ব। তার নামেই দেশের প্রথম স্যাটেলাইটের নামকরণ করা হয়েছে।

আর সেই স্যাটেলাইটকে মহাকাশে নিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্সের সব থেকে আধুনিক মডেলের শক্তিশালী রকেট। রকেটটি ফ্যালকন ৯ এর নতুন মিনটেড ব্লক-৫ সংস্করণ। বঙ্গবন্ধু-১ কে আকাশে নেয়ার মাধ্যমে সফলভাবে নিজের সক্ষমতার জানান দিয়েছে রকেটটি।

বিশ্বের ৫৭ তম দেশ হিসেবে শুক্রবার (১১ মে) দিবাগত রাত বাংলাদেশ সময় ২টা ১৪ মিনিটে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল লঞ্চ প্যাড থেকে দেশের ইতিহাসের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপিত হয়।

বিজ্ঞাপন

এএফপির এক প্রতিবেদনে এই রকেটিকে স্পেসএক্সের বানানো এখন পর্যন্ত সব থেকে শক্তিশালী রকেট হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনটিতে এই যান সম্পর্কে বলা হয়েছে, নাসার বিজ্ঞানীদের মহাকাশে যাওয়ার জন্য নির্মিত হয়েছে বিশেষ ধরনের এই রকেট যা ফ্যালকন ৯ এর ব্লক-৫ নামে পরিচিত।

স্পেসএক্সের মহাকাশযান সিরিজের নাম ড্রাগন এবং রকেট সিরিজের নাম ফ্যালকন। ফ্যালকন সিরিজের সর্বশেষ প্রযুক্তির ভার্সন-৫ এর রকেট ফ্যালকন-৯। ফ্যালকন ৯ যানের নতুন এই মিনটেড ব্লক-৫ সংস্করণে এর আগের সংস্করণ (ব্লক-৪) থেকে নিরাপত্তা ও শক্তি বৃদ্ধির জন্য শতাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবং বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সফলভাবে পরীক্ষিত হলো এই রকেটটি।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার উড্ডয়নের কিছু সময় পর রকেটটির প্রধান স্টেজ বুস্টার প্রশান্ত মহাসাগরের ভাসমান যানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসে অবতরণ করে। রকেটের সবচে দামী অংশ বুস্টার, রকেটকে মহাকাশের অভিমুখে পাঠিয়ে দেওয়ার পর, এর সাহায্যে রকেট আবার নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসে। আর স্পেসএক্সেরই আবিষ্কার এই প্রযুক্তি।

আগে যখন একটি রকেটকে যখন মহাকাশে পাঠানো হতো, তখন তার বুস্টার রকেটটিকে অরবিটের দিকে ঠেলে দিয়ে নিজে ধ্বংস হয়ে সমুদ্রে পড়ে যেতো। স্পেসএক্সের নতুন বুস্টার প্রযুক্তি আবিষ্কারের পর এই প্রক্রিয়ায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। তখন থেকেই একটি রকেটকে বার বার ব্যবহার করা সম্ভব হয়।

বারবার ব্যবহার করা সম্ভব এরকম রকেট তৈরি নিয়ে স্পেস কোম্পানিগুলোর মধ্যে বহুদিন ধরেই প্রতিযোগিতা চলে আসছিলো। নাসা যে খরচে মহাকাশে যান পাঠায় তার চেয়ে বহু কম খরচে নভোখেয়া পাঠানোর জন্য ছিলো এই চেষ্টা। স্পেসএক্সের বিশেষ মডেলের এই নতুন ব্লক-৫ বুস্টার রকেট কম খরচে দ্রুত কমপক্ষে ১০ বার ব্যবহার করা যাবে এমন ডিজাইনেই তৈরি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ৪ মে ফ্লোরিডার কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টারে নতুন এ রকেটির পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও ফ্লোরিডার প্রতিকূল আবহাওয়াজনিত কারণে কয়েক দফা পেছানো হয়েছিলো।

সর্বশেষ নতুন তারিখ ১০ মে (বৃহস্পতিবার) উৎক্ষেপণের মাত্র ৪২ সেকেন্ড আগে আবারও একদিনের জন্য স্থগিত করা হয় উৎক্ষেপণ। এরপর শুক্রবার (১১ মে) দিবাগত রাত বাংলাদেশ সময় ২টা ১৪ মিনিটে বিশ্বের সকল বাংলাদেশিকে উচ্ছ্বাসে মাতিয়ে মহাকাশে উড়ে ‘বঙ্গবন্ধু-১’।

মার্কিন মহাকাশ ও রকেট প্রস্তুতকারক এবং উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০০২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন অ্যালোন মাস্ক। নিজেদের নতুন এই অধ্যাধুনিক রকেট ফ্যালকন নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সবার মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা ছিলো। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটকে নিয়ে সফলভাবেই নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করতে পেরেছে ফ্যালকন ৯।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে মোট ৪০ টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২৬টি কেইউ-ব্যান্ড ও ১৪টি সি-ব্যান্ডের। প্রতিটি ট্রান্সপন্ডার থেকে ৪০ মেগাহার্টজ হারে তরঙ্গ (ফ্রিকোয়েন্সি) বরাদ্দ সরবরাহ পাওয়া যাবে। এ হিসেবে ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মোট ফ্রিকোয়েন্সি ক্ষমতা হবে ১ হাজার ৬০০ মেগাহার্টজ।

সারাবাংলা/এমআইএস

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন