বিজ্ঞাপন

বাড়িটিকে জড়িয়ে রেখেছে শূন্যতা, হাহাকার

July 1, 2018 | 9:02 am

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: গুলশান-২ গোলচত্বর হয়ে ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ি। বাড়িটিতে এখন সুনসান নীরবতা। যারা সেখানে বসবাস করছে তারাও থাকেন মাঝে মধ্যে। দুপুরের আকাশ কিংবা দিনের আলো কোনোকিছুই বাড়িটির গুমোট-নীরব-সুনসান নীরব নিঃসঙ্গতার ঘোর কাটাতে পারেনি। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে লেকের ধারের এই বাড়িটি ‘হলি আর্টিজান বেকারিতে’ কয়েকজন বিপথগামী জঙ্গির জঘন্য বর্বরোচিত হামলা করে বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। যে ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যায় গোটা দেশ। আন্তর্জাতিক অঙ্গণেও পড়ে শোরগোল।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে বাড়িটি সরেজমিনে দেখতে গিয়ে সুনসান নীরবতার হাহাকারের চিত্রই খুঁজে পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ির ফটকে তালা ঝুলছিল। অথচ লেকের ধারের বাড়িতে একসময় ছিল হলি আর্টিজান বেকারি। কিন্তু ২০১৬ সালের ১ জুলাই জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে। যৌথ বাহিনীর কমান্ডো অপারেশন হামলায় জঙ্গিরা মারা যাওয়ার পর কয়েক মাস আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল বাড়িটি। যা গত বছর মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তবে বাড়িতে আর হলি আর্টিজান বেকারি চালু হয়নি। গুলশান অ্যাভিনিউ-এর র‌্যাংগস আর্কেডের একটি তলায় স্বল্প পরিসরে বেকারিটি চালু হয়, বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির এক ব্যবস্থাপক।

সরেজমিনে, শুক্রবার দুপুরের সুনসান নীরবতার মাঝে বাড়ির প্রবেশমুখে প্রধান ফটকে কথা হয় নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। দুই এক কথায় তিনি শুধু জানান, ওই বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে যিনি নিয়োজিত আছেন তিনি আসবেন শনিবার। তাই তিনি আগামীকাল (শনিবার, ৩০ জুন) আসতে অনুরোধ করেন। তিনি আজ তার উপর দায়িত্ব অর্পণ করে গেছেন। আরও কিছু বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।এরপর বাড়িটির কাছে গিয়ে ছবি তুলতে তিনি বাধা দেন। তিনি বলেন, ফটকের কাছাকাছি নয়, এখান থেকেই ছবি তোলেন। নিরাপত্তাকর্মী মো. হোসেন বাড়িটিতে বাড়ির মালিক মাঝে মাঝে এসে থাকেন-এ ছাড়া তিনি আর বেশি কথা বাড়াতে চাননি। গুলশানের লেকের পাশে দুটি প্লটের একটিতে উত্তর পাশের দোতলা ভবনটিতে একসময় ছিল হলি আর্টিজান বেকারি, আর দক্ষিণপাশে রয়েছে ‘লেকভিউ ক্লিনিক’। তবে ক্লিনিকটি এখনও সচল রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে নয় ইতালিয়ান, সাত জাপানিজ, একজন ভারতীয়, একজন আমেরিকান-বাংলাদেশ দ্বৈত নাগরিক ও দুজন বাংলাদেশি এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করে। জঙ্গিরা রেস্টেুরেন্টে আগত অন্যান্য অতিথি এবং কর্মচারীদের রাতভর জিম্মি করে রাখে। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ অভিযান পরিচালিত করে। এতে পাঁচ জঙ্গি ও একজন পিৎজা শেফ নিহত হয়।

নিহতদের মধ্যে ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন, ঢাকার ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান ক্রিয়েটিভসের সাবেক পরিচালক ইশরাত আখন্দ এবং ল্যাভেন্ডার গ্রুপের মালিক মনজুর মোরশেদের নাতনি অবিন্তা কবীর।

এ ছাড়াও ঘটনার সময় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হওয়া একজন কর্মচারী ৮ জুলাই নিহত হন। ওই ঘটনায় গুলশান থানার পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন