August 3, 2018 | 1:09 pm
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নিরাপদ সড়কের দাবিতে থাকা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বাঁচার দাবি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক দাবি নয়, এটি বাঁচার দাবি।’
শুক্রবার (৩ আগস্ট) সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাসায় এসে তার পরিবারকে স্বান্তনা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।
নিজের সন্তানের প্রসঙ্গ টেনে এরশাদ বলেন, ‘আমার ছেলে গাড়িতে করে স্কুলে যায়। যদি সে বাসে করে স্কুলে যেত তাহলে আমি সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতাম যে সে ফিরে আসবে কি না? আর এমন কোনো খবর পেলে আমি আত্মহত্যা করতাম। আমি মৃত ছেলের মুখ দেখতে চাই না।’
এর আগে প্রায় ১০ মিনিটের মতো নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এরশাদ। এ সময় তাকে দিয়ার পরিবারের সদস্যদের মাথায় হাত দিয়ে স্বান্তনা দিতেও দেখা গেছে। আর সার্বিক বিষয়েই কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর।
এরশাদ বলেন, রাস্তায় যারা আন্দোলন করছে এরা সবাই নিরাপদ সড়কের দাবিতে নেমেছে। তারা নিরাপদ সড়ক চায়। এটি রাজনৈতিক দাবি নয়, এটি বাঁচার দাবি। আমরা এ আন্দোলনকে সমর্থন করি। এবং সরকারেরও সবগুলো দাবি মেনে নেয়া উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকার চাইলে আরো বেশি টাকা দিতে পারত। ২০ লাখ টাকা কোনো টাকা না। প্রধানমন্ত্রী এসে দেখে যেতে পারতেন এরা কতটা কষ্টে একটা ঘরে কতগুলো মানুষ বসবাস করে।’
আপনারা কোনো সহায়তা দেবেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেখানে ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন সেখানে আমরা আর কতোইবা দিবো। আমাদের এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা এই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেব।’
নৌ মন্ত্রীর আচরণে খুব কষ্ট পেয়েছেন উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘এখানে শিক্ষার্থীরা মারা গেছে। আর তা দেখে উনি হাসছেন। ভারতে দুর্ঘটনায় ৩৩ জন মারা যাওয়ার বিষয়টিকে উনি উদাহরণ দিচ্ছেন। কিন্তু সেটা তো দুর্ঘটনা। আর এখানে যা হয়েছে তা তো হত্যাকাণ্ড।’
সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত জানিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি যখন রাষ্ট্রপতি ছিলাম তখন সড়ক দুর্ঘটনার শাস্তির ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে একটি আইন পাস করেছিলাম। পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে সে আইনটি বাতিল করে যাবজ্জীবন করতে হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় এভাবে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে মৃত্যু ঘটলে অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াই উচিত।’
এর আগে, সকালে দিয়াদের বাসায় আসেন ক্যান্টম্যান্ট বোর্ডের সিইও বিগ্রেডিয়ার মো. জালাল গণি খান ও শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ নূর নাহার ইয়াসমিন। তারা কলেজের পক্ষে দিয়ার পরিবারের হাতে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে