বিজ্ঞাপন

শিশু রাইফার মৃত্যু: সরিয়ে দেওয়া হলো ‍দুই চিকিৎসককে

July 7, 2018 | 4:12 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ম্যাক্স হাসপাতালের দুই ডাক্তারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের কেন স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করা হবে না সেই বিষয় জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদনে সাংবাদিক কন্যা রাইফা খানের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের অবহেলাকে দায়ী করার পর এ ব্যবস্থা নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক হলেন- ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত এবং ডা. শুভ্র দেব।

ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই দুই চিকিৎসককে আমরা দায়িত্ব পালন করতে দিচ্ছি না। তদন্ত প্রতিবেদনে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য তাদের দায়ী করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছি।’

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুই চিকিৎসককে চাকুরিচ্যুত করার খবর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোনো ডাক্তারকে সরাসরি চাকুরিচ্যুত করার সুযোগ বিদ্যমান আইনে নেই। আমরা যেটা করেছি, তাদের কেন চাকুরিচ্যুত করা হবে না সেটার জন্য শোকজ করেছি। শোকজের জবাব পেলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিশু রাইফার মৃত্যুর পরই চিকিৎসক দেবাশীষকে শোকজ করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেবাশীষ সেটা গ্রহণ না করে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেন। আর শুভ্র দেব শোকজ নোটিশ গ্রহণ করে জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেবাশীষ এবং শুভ্র দু’জনই নিয়মিত হাসপাতালে এলেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি লিয়াকতের।

অভিযুক্ত আরেক চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরীর বিষয়ে লিয়াকত বলেন, ‘উনি আমাদের নিজস্ব ডাক্তার নন, কল করলে তিনি আসেন। এক্ষেত্রে আমরা নিজ থেকে আর উনাকে কল করব না। যদি রোগীর স্বজনরা চান সেক্ষেত্রে হয়ত কল করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

গত ২৮ জুন দৈনিক সমকালের জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক রুবেল খানের আড়াই বছরের শিশু গলা ব্যাথায় আক্রান্ত রাফিদা খান রাইফাকে নগরীর মেহেদিবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৯ জুন রাতে ভুল চিকিৎসায় শিশুটি মারা যায়। শুরু থেকেই রুবেল খান তার মেয়ের মৃত্যুর জন্য ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের অবহেলাকে দায়ী করেন।

ঘটনার রাতেই সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ম্যাক্স হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ ডা.দেবাশীষসহ তিনজনকে আটক করে চকবাজার থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে বিএমএ চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী কয়েকজনকে নিয়ে চকবাজার থানায় গিয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে ঔর্দ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।

এসময় পুলিশের মধ্যস্থতায় ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে বিএমএ ও সাংবাদিকদের প্রতিনিধিও ছিল। তবে বিএমএ পরে তাদের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে নেয়। কমিটিকে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী এবং সিইউজে’র যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ’র স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে দেওয়া হয়। এতে তিন চিকিৎসকের অবহেলা রাফিয়ার মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে শিশু রাফিয়ার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের গ্রেফতার এবং ফয়সল ইকবালের ঔর্দ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে আন্দোলন করে আসছেন চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন