বিজ্ঞাপন

আনুষ্ঠানিক অভিযোগ নেই, তবে তদন্ত হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

June 2, 2018 | 1:22 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: কক্সবাজারের টেকনাফে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ স্থানীয় কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হওয়ার ঘটনায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ না পাওয়া গেলেও একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শনিবার (২ জুন) ধানমন্ডির নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী একথা জানান। মন্ত্রী বলেন, `কাউন্সিলর একরামুলের ঘটনায় যে অডিও রেকর্ড প্রকাশ হয়েছে সেটি ভিকটিমও (একরামের পরিবার) তো আমাদের কাছে সরবরাহ করতে পারত। অফিসিয়ালি রেকর্ডটি আমাদের কেউ সরবরাহ করেনি এমনকি এ বিষয়ে কেউ কোন তথ্যও দেননি। কাজেই আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোন তথ্য নেই।

একরামুলের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ না পাওয়া গেলেও একজন ম্যাজিস্ট্রেট একরাম নিহত হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করবে। তদন্ত শেষে ওই ম্যাজিস্ট্রেট যে রিপোর্ট দেবেন তার ভিত্তিতেই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যদি কেউ অন্যায় কাজ করে থাকে, কিংবা প্রলুব্ধ বা স্বপ্রণোদিত অথবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু করে থাকে, তাহলে তার বিচার হবে। তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আর আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেন না, সেটাও আপনারা দেখেছেন। আমরা আরও বলতে চাই, যে ঘটনা নিয়ে আপনারা প্রশ্ন তুলেছেন সেটা নিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করবে। ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তে যদি কোনরকম অসংলগ্ন বিষয় বা রিপোর্টে অসংগতিপূর্ণ অবস্থা খুঁজে পান তবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা যে অডিওটির কথা বলছেনম, আমাদের কাছে অফিসিয়ালি আসেনি সেটি। আমাদের কাছে সেরকম তথ্যও নেই। অফিসিয়ালি ঘটনাটিও কেউ বলেনি, তথ্য এলে আমাদের যা করণীয় তাই করব। আমি আবারও রিপিট করছি, আমাদের কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন অনুযায়ী যদি কেউ ইচ্ছাপূর্বক এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অফিসিয়ালি বিষয়টি কে জানাবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যে অডিওটি প্রকাশ পেয়েছে সেটি এসবি, ডিজিএফআই ও এনএসআইসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা দেখবে। তারা এটি আমাদের সরবরাহ করবে যে আসলে ঘটনাটি কি। কোনো একটা ঘটনা ঘটলে এগুলি তো আসে। আমাদের কাছে যে ভিক্টিম সেও অডিওটি দিতে পারত। সে দেয়নি। তবে আমরাও চেক করব বিষয়টি।’

বিজ্ঞাপন

মাদকবিরোধী অভিযান এটা চলবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ কি রকম ইফেক্টেড হচ্ছে। আমাদের মেধা হারিয়ে যাবে। আমাদের যুবসমাজ পথ হারাবে। গোটা দেশের মানুষ জানে আমরা কোথায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম, মাদক আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল। অভিযান শুরুর পর সর্বস্তরের মানুষ কিভাবে স্বাগত জানিয়েছিল। অভিযান চালিয়ে নেওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ এসেছে। পাশাপাশি আমি এটা বলতে পারি, এই অভিযানে কেউ যদি উদ্দেশ্যমূলক কিংবা প্রলুব্ধ হয়ে কিছু করে থাকে তার বিচার হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘যে লিস্ট অনুযায়ী এখন অভিযান চলছে সেটা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একার লিস্ট নয়। বেশ কয়েকটি সংস্থার করা যৌথ লিস্ট অনুযায়ী অভিযান চলছে। যাদের নাম তালিকায় আসছে তাদের কেবলমাত্র আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ডাকে সাড়া দিচ্ছেন তাদের রেগুলার আদালত বা মোবাইল কোর্টে এনে নিয়মিত বিচার করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার আসামিকে জেলে পাঠানো হয়েছে। কারাগারে এখন মোট বন্দি সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার। যার প্রায় ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ মাদকের মামলার আসামি।’

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে ঢেলে সাজানোর কথা ছিল, তাদের অস্ত্র দেওয়ার কথা ছিল এ প্রক্রিয়া কতদূর জানতে চাইলে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাদকের একটা নতুন আইন হচ্ছে। সেটি পাস হলে সবকিছু সমাধান হবে।’

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলর একরামুল হককে অন্যায়ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী আয়েশা বেগম। তিনি বলেন, ‘২৬ মে রাতে একটি গোয়েন্দা সংস্থার মেজর পরিচয়ে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। আমার স্বামী মোবাইলে আমার মেয়ে ও আমার সাথে কথা বলেন। এ সময় তার কণ্ঠে ছিল আতঙ্কের ছাপ। এরপর আমার মোবাইলটি সারাক্ষণ খোলা ছিল এবং রেকর্ড ছিল। ওই দিন রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চিৎকার ও গুলির শব্দ শুনে আমি ও আমার পরিবার আঁতকে উঠি। তখন বুঝতে বাকি থাকে না, আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

আরও পড়ুন:
বড় অভিযানে দুয়েকটা ভুল হতেই পারে: কাদের
কাউন্সিলর একরামুলকে হত্যার অভিযোগ পরিবারের

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন