সাহেদ গ্রেফতার
১৫ জুলাই ২০২০ ০৭:০৪
ঢাকা: রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার (১৫ জুলাই) ভোরে রাত সাহেদকে সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষা ও চিকিৎসায় প্রতারণার অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদফতর তার মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছিল।
বুধবার ভোরে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিশেষ অভিযানে বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর সীমান্তে থেকে চিংড়ির ঘেরে নৌকায় পালিয়ে ছিলেন সাহেদ। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। এসময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন- প্রতারণার শেষ নেই রিজেন্টের: রক্তের নমুনা নিয়ে ইসিজি পরীক্ষা!
র্যাব আরও জানিয়েছে, সাহেদকে আপাতত সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে রাখা হয়েছে। তাকে র্যাবের হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হবে। সকাল সাড়ে ৮টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে হেলিকপ্টারটির অবতরণ করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন- মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স নিয়েই রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা!
এর আগে, রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসায় অনিয়ম-প্রতারণার বিভিন্ন অভিযোগ উঠে আসে সারাবাংলার অনুসন্ধান। বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরেও। ৬ জুলাই হাসপাতালটিতে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে বিভিন্ন অনিয়ম-প্রতারণার প্রমাণ মেলে। পরে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে প্রশাসন।
অভিযানের পর র্যাব জানায়, বাসায় গিয়ে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের অনুমতি না থাকলেও তারা সে কাজটি করত। আবার হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় করোনা পরীক্ষা করা হলেও তারা এর জন্য টাকা নিত। নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো হাসপাতালে ফেলে রেখে ভুয়া রিপোর্ট দিত তারা। রিজেন্ট হাসপাতাল সরকারিভাবে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেও বিপুল অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছে রোগীদের কাছ থেকে।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সেজে পুলিশের সঙ্গে জালিয়াতি সাহেদের
পরে স্বাস্থ্য অধিদফতর রিজেন্ট হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার আদেশ দেয়। এর মধ্যে র্যাব রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের নামে মামলা দায়ের করে। অভিযানের দিনই আটক হয়েছিলেন আট জন। পরে সাহেদের ঘনিষ্ঠ তারেক শিবলীকেও রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সাহেদের অন্যতম সহযোগী রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সাহেদ পলাতক ছিলেন। আজ ভোরে তিনিও ধরা পড়লেন র্যাবের জালে।
আরও পড়ুন- স্বাস্থ্য অধিদফতর ও রিজেন্টের চুক্তিতে যা ছিল
এর মধ্যে র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার আট জনকে গত ৮ জুলাই আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এর মধ্যে একজন কিশোর হওয়ায় তাকে গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। বাকি সাত জনকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আলমগীর গাজী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সাহেদের অন্যতম সহযোগী তারেক শিবলীকেও গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। ১০ জুলাই আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তার রিমান্ড চলছে।
আরও পড়ুন-
পরীক্ষা ছাড়াই করোনার রিপোর্ট দিত রিজেন্ট হাসপাতাল
রিজেন্ট চেয়ারম্যান সাহেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর
‘অপরাধ ঢাকতে কৌশল নিয়েছিল রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ’
‘প্রতারণা করে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রিজেন্ট হাসপাতাল’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে প্রায় তিন কোটি টাকার বিল চেয়েছিল রিজেন্ট
মো. সাহেদ মৌলভীবাজারে গ্রেফতার রিজেন্ট হাসপাতাল রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান র্যাবের হাতে গ্রেফতার