মামলা স্থগিত চেয়ে ডা. সাবরিনার আবেদনের আদেশ ১৩ সেপ্টেম্বর
১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:১৫
ঢাকা: রাজধানীর তেজগাঁও থানায় ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা আবেদন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ওই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। একই অভিযোগে কর্মস্থল জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইসিভিডি) থেকেও বরখাস্ত হয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা।
বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ডা. সাবরিনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদেশের দিন ঠিক করে দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ডা. সাবরিনার আইনজীবী সাইফুজ্জামান তুহিন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলার মূল ভিত্তি ডক্যুমেন্টের ওপর। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে হাজার হাজার করোনার রিপোর্ট জালিয়াতি করা হয়েছে। অথচ ডক্যুমেন্টে দেখানো হয়েছে ১৯টি। বিষয়টি জেনে আমরা বিচারিক আদালতে সেসব ডক্যুমেন্ট চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলাম। প্রসিকিউশনও এসব ডক্যুমেন্টের ওপর নির্ভর করে মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ডক্যুমেন্ট চেয়ে আমাদের আবেদন বিচারিক আদালত খারিজ করে দিয়েছেন।
জেকেজি নিয়ে সারাবাংলার অনুসন্ধান-
- সরকারি চাকরি করেওবেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান!
- চিকিৎসকদের পিপিই নেই, জেকেজির জন্য ‘আনলিমিটেড’
- সরকারি খরচে বেসরকারি ‘প্রতারণা’ জেকেজি হেলথকেয়ারের
- করোনা নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণার জাল
- অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ধমক দিয়ে কাজ করাত জেকেজি হেলথকেয়ার
আইনজীবী বলেন, ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছি। আবেদনে মামলার ডক্যুমেন্টের পাশাপশি মামলাটিতে স্থগিতাদেশ চেয়েছিলাম। আদালত আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার আদেশের জন্য ঠিক করে দিয়েছেন।
এর আগে, জেকেজি হেলথ কেয়ারের করোনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির বিভিন্ন তথ্য উঠে আসে সারাবাংলার অনুসন্ধানে। জানা যায়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করলেও তার জন্য টাকা নিত জেকেজি। অনুমতি না থাকলেও বাসায় নিয়ে টাকার বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ করত। এমনকি তারা নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দিত। স্বাস্থ্য অধিদফতরেও এসব বিষয় নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। পরে জেকেজি হেলথকেয়ারের করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের অনুমতি বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ডা. সাবরিনাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এর মধ্যে এসব প্রতারণা-জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের সিইও আরিফসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলার তদন্তে জেকেজি হেলকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনার নাম উঠে আসে। গত ১২ জুলাই তাকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডাকা হয় তেজগাঁও থানায়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে তা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ এরই মধ্যে একাধিকবার রিমান্ডে নিয়ে আরিফ ও ডা. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তারা দু’জনেই বর্তমানে এই মামলায় কারাগারে আছেন।
আরও পড়ুন-
রিমান্ড শেষে ডা. সাবরিনা কারাগারে
ডা. সাবরিনা-আরিফসহ ৮ জনের বিচার শুরু
জেকেজি হেলথকেয়ার ডা. সাবরিনা মামলা স্থগিতের আবেদন হাইকোর্টে আবেদন