June 27, 2018 | 1:04 pm
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের এক গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় মিশনের বাংলাদেশি সদস্য লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশরাফ সিদ্দিকি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৬ জুন) সুদানের ইকুয়েটরিয়া প্রদেশের ইয়ে এলাকা থেকে লাসু এলাকায় ওই গাড়িবহর যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশরাফ সিদ্দিকী বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরের জোতদারপাড়া গ্রামে। বাবার নাম আনোয়ারুল ইসলাম। ব্যক্তিজীবনে আশরাফ সিদ্দিকী দুই কন্যাসন্তানের জনক। তার স্ত্রী গৃহিণী।
সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের প্রধান ডেভিড শিয়েরার জানিয়েছেন, ‘ভয়াবহ এক সহিংসতা’র ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আশরাফ সিদ্দিকী। শান্তিরক্ষী ও ত্রাণকর্মীদের জন্য সবসময়ই মুক্তভাবে ও নিরাপদে কাজ করার ও চলাচলের সুযোগ থাকা উচিত। এ ধরনের ব্যক্তিদের ওপর এমন নির্বোধের আক্রমণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
পরে এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ত্রাণের একটি গাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আশরাফ সিদ্দীকী। ওই সময় অজ্ঞাত বন্দুকধারীর অতর্কিত গুলিতে তিনি মারা যান। পরে নেপালি শান্তিরক্ষী বাহিনী পাল্টা গুলি শুরু করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। জাতিসংঘ মহাসচিব এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন বলে জানান দুজারিক।
সুদানে বিবদমান সরকার ও বিরোধী পক্ষের কারা এই হামলা চালিয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
এ ঘটনায় সুদান সরকার নিন্দা জানিয়েছে উল্লেখ করে সরকারের মুখপাত্র অ্যাটেনি ওয়েক বলেন, কেবল সরকারের কাছেই নয়, এখন সবার কাছেই অস্ত্র রয়েছে। তাই এ ঘটনার জন্য কেবল সরকারি বাহিনীকেই দায়ী করার সুযোগ নেই।
সুদানে চলতি জুন মাসে এটা শান্তিরক্ষা বাহিনীর বহরের ওপর তৃতীয় হামলার ঘটনা। ইউনিটি প্রদেশে আগের দুই হামলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে দক্ষিণ সুদানে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। গত পাঁচ বছরে এই গৃহযুদ্ধে এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ। দেশটিতে বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা অবশ্য করে আসছে আঞ্চলিক দেশগুলো।
সর্বশেষ গত সোমবার প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়ায় দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রিক মাচারের মধ্যে গত দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব আফ্রিকান ব্লকের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক।
সারাবাংলা/টিআর