বিজ্ঞাপন

দেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭২ বছর

June 27, 2018 | 4:34 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ বছর। এর আগে ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ গড় আয়ু হিসেব করা হয়েছিলো ৭১ বছর ৭ মাস ৬ দিন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৭ সালের হিসাবে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (২৭ জুন) রাজধানীর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মিলনায়তনে ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস অব বাংলাদেশ’ (এমএসভিএসবি) শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে যেখানে পুরুষের গড় আয়ু ছিল ৭০ বছর ৩ মাস ১৮ দিন। ২০১৭ সালে তা  বেড়ে হয়েছে ৭০ বছর ৭ মাস ২০ দিন।

বিজ্ঞাপন

তবে পুুরুষের চেয়ে নারীর গড় আয়ু বাড়ার হার বেশি। ২০১৬ সালে নারীর গড় আয়ু ছিল ৭২ বছর ১০ মাস ২৪ দিন। ২০১৭ সালে এটি বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর ৬ মাস।

প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার। ২০১৭ সালের ১ জুলাই জনসংখ্যার প্রাক্কলন করা হয়েছিল ১৬ কোটি ২৭ লাখ। এটি অনুমিত হিসাব। হিসাব অনুযায়ী পুুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১৯ লাখ ১০ হাজার, নারীর সংখ্য ৮ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার।

২০১৩ সাল থেকে একই হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশেই স্থির রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবন মিলনায়তনে প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বিবিএস মহাপরিচালক মো. আমীর হোসেনর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এমএসভিএসবি প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম আশরাফুল হক। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন আইসিডিডিআরবির গবেষক আবদুর রাজ্জাক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছর শেষে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৭ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অর্জিত হতে পারে। এর আগে অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের প্রাক্কলিত হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হিসাব করা হয়েছিল। আমাদের কাছে এই মুহুর্তে যে তথ্য আছে তা হিসাব করলে আমরা প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলিত হিসাবকে ছাড়িয়ে যাব।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদন অনুযায়ী-

বেড়েছে বিবাহিত ও তালাকপ্রাপ্ত পুরুষের সংখ্যা: ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশের মোট বিবাহযোগ্য পুরুষ জনসংখ্যার ৫৯ দশমিক ৯ শতাংশ বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। ২০১৬ সালে এ হার ছিল ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ। ১০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষের বিয়ের হিসাব কষে এ হার বের করা হয়েছে।

একই সঙ্গে বিপত্বীক, তালাকপ্রাপ্ত ও বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন পুরুষের হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশে। অবিবাহিত পুরুষ জনসংখ্যার হার কমে হয়েছে ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ। যা এর আগের বছর ছিল ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ।

নারীদের বিবাহ, তালাক ও পৃথক বসাবাস বেড়েছে : বিবাহ বিচ্ছিন্ন অবস্থার থাকার প্রবণতা ২০১৬ সালের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। ২০১৭ সালে এ হার হয়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ১০ শতাংশ। ১০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে বিবাহিত ও অবিবাহিতের হার খুব একটা বাড়েনি।

বিবাহিত নারীর হার গত দুই বছরে ছিল যথাক্রমে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ ও ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ। অবিবাহিত নারীদেও এই হার ২০১৭ সালে ২৬ দশমিক ২ শতাংশ ও ২০১৬ সালে ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ।

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার বৃদ্ধি : প্রতিবেদন অনুযায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার ২০১৬ সালের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। ২০১৭ সালে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ এ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন, যা আগের বছরে ছিল ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ। ৭ বছরের বেশি বয়সী জনসংখ্যার স্বাক্ষরতার হার ৭১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে।

বয়ষ্ক শিক্ষার হার বৃদ্ধি : ১৫ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী জনসংখ্যার শিক্ষার হার ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে।

অপরিবর্তিত ধর্মভিত্তিক বিভাজন: জনসংখ্যার ধর্মভিত্তিক বিভাজনে কোনো রকম পরির্বতন হয়নি। গত দুবছর ধরে তা একই রয়েছে। মুসলিম ৮৮ দশমিক ৪ শতাংশ ও অন্যান্য ১১ দশমিক ৬ শতাংশ।

বেড়েছে এইচআইভি/এইডস: মা থেকে সন্তানের এইচআইভি বা এইডস সংক্রমিত হওয়ার শতকরা হার ২০১৩ সালে ছিল ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০১৬ সালে ছিল ৬৬ দশমিক ৯ শতাংশ বর্তমানে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ। যারা অন্তত একটি মোড সম্পর্কে জানে। এ ছাড়া যারা সবগুলো মোড সম্পর্কে জানে এরকম মা থেকে সন্তানে এইচআইভি বা এইডস সংক্রমিত হওয়ার শতকরা হার ২০১৬ সালে ছিল ২৯ দশমিক ১ শতাংশ ২০১৮ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৫ শতাং শে।

সারাবাংলা/জেজে/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন