বিজ্ঞাপন

অর্জন জনগণের, সাফল্য ধরে রাখতে হবে: শেখ হাসিনা

June 27, 2018 | 5:40 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: উন্নয়ন পরিকল্পনা, সুদূরপ্রসারী কার্যক্রম ও গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলেই বিগত ৯ বছরে সরকার সর্বক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এ অর্জন বাংলার জনগণ। এই সাফল্যের ধারাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।’

বুধবার (২৭ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহানের পৃথক দু’টি প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের বিপুল জনসংখ্যাকে বোঝার বদলে সম্পদে পরিণত করতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, সুদূরপ্রসারী কার্যক্রম ও গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলেই বিগত ৯ বছরে সর্বক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ হবে।’

বিজ্ঞাপন

মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ প্রসঙ্গে অপর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের দীর্ঘ ৬ বছরের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশ জয় সম্ভব হয়েছে। মহাকাশে আজ বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। এ গৌরব আমাদের সরকারের, এ গৌরব দেশের ১৬ কোটি মানুষের। স্যাটেলাইট টেকনোলজি ও সেবা প্রসারের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। স্পেস টেকনোলজির জ্ঞান সমৃদ্ধ মর্যাদাশীল জাতি গঠনে অনবদ্য ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশীল, স্বনির্ভর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট যোগাযোগের সূচনা করেন। আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগে মহাশূণ্যে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের পদক্ষেপ গ্রহণ করি। স্বপ্নের স্যাটেলাইট নির্মাণ ও এর সফল উৎক্ষেপণে আমি গর্বিত এবং আনন্দিত।’

২০১২ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রকল্পের আওতায় ফিজিবিলিটি স্টাডিসহ সকল প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়। ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। এ জটিল নির্মাণ প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লেগেছে ২ বছর। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এ মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার আছে। এর মধ্যে ২০টি বাংলাদেশের জন্য এবং ২০টি ট্রান্সপন্ডার লিজ দেওয়া যাবে। ট্রান্সপন্ডার লিজ দিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বর্তমানে প্রদেয় বার্ষিক প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর কাভারেজভূক্ত এলাকা হলো বাংলাদেশসহ সকল সার্কভূক্ত দেশ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তুর্কমেনিস্তান, কাজাখিস্তান এবং উজবেকিস্তান।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ‘সরকারের দক্ষ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ফলে রাজস্ব আহরণে ঊর্ধ্বগতি এবং ঋণ গ্রহণে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। মূল্যস্ফীতিও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। প্রবৃদ্ধির সুফল সুষমভাবে বন্টিত হওয়ায় একদিকে যেমন মাথাপিছু আয় বেড়েছে, অন্যদিকে দারিদ্র্য ও অসমতা কমেছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। প্রতিবেশি ও সমমানের রাষ্ট্রসমূহের তুলনায় সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অভূতপূর্ব সাফল্যে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল। সর্বক্ষেত্রে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় দেশ আজ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।’

এছাড়াও সরকারি দলের এম এ মালেকের আরেক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তোলার জন্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুবিধাদি সৃষ্টি করা হচ্ছে, গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালে ২.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রকৃত বৈদেশিক বিনিয়োগ পাওয়া গেছে।’

বাংলাদেশে ২০০৯ হতে ২০১৭ পর্যন্ত কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস সম্পূর্ণরূপে চালু হলে বর্তমানে জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগের অবদান প্রায় ২৩ শতাংশ হতে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব হবে। এদেশে বিশ্বমানের বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টির যে কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে কর্মসংস্থান ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।’

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে প্রথমবার যৌথ টহলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত

সারাবাংলা/এনআর/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন