বিজ্ঞাপন

ক্ষমা চাইলেন ম্যারাডোনা

July 6, 2018 | 1:25 pm

।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

ইংল্যান্ডের সঙ্গে আর্জেন্টিনার ফুটবল ঈশ্বর খ্যাত দিয়েগো ম্যারাডোনার সম্পর্কটা যে একেবারেই ভালো নয়, সেটা জানেন সবাই। ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের কারণেই ইংলিশরা দুই চোখে দেখতে পারেন না ম্যারাডোনাকে। এদিকে, আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি নিজেও সুযোগ পেলেই ইংল্যান্ডকে খোঁচা দিতে ভুলেন না। রাশিয়া বিশ্বকাপে ফিফার দূত হিসেবে ম্যাচ দেখতে গিয়ে একের পর এক সমালোচনার জন্ম দেওয়া ম্যারাডোনা আরও একবার ইংলিশদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, সমালোচনা করেন ফিফার ম্যাচ রেফারিকে নিয়ে। অবশেষে বাধ্য হয়েই ক্ষমা চাইতে হয়েছে ম্যারাডোনাকে।

ঘটনাটি শেষ ষোলোর ম্যাচে, যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড-কলম্বিয়া। রাদামেল ফ্যালকাও, ইয়েরি মিনাদের কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নেয় ইংলিশরা। এমন ম্যাচের পর রেফারির সমালোচনা করেছেন খোদ ম্যারাডোনা। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের জয়কেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছেন এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। ম্যারাডোনার মতে, ইংলিশদের এই জয়ের পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রেফারি মার্ক গেইগার। আর ফিফার নিয়োগ দেওয়া রেফারিকে নিয়ে সমালোচনা করায় ফিফার দূত হিসেবে যাওয়া ম্যারাডোনাকে ‘তিরস্কার’ করে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা।

রাশিয়া বিশ্বকাপে ফিফার দূত হিসেবে কাজ করছেন ম্যারাডোনা। এজন্য ফিফার প্রতিটি ম্যাচে ১০ হাজার পাউন্ড গচ্চা যাচ্ছে। অথচ একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন ম্যারাডোনা। এর আগে গ্যালারিতে প্রকাশ্যে নারী ভক্তের সঙ্গে নাচ, চুরুট টানা, অশোভন অঙ্গভঙ্গি নিয়ে তার সমালোচনা করেছিল ফিফা। কদিন আগেই ফিফা আরেকটি বিবৃতি দিয়েছিল ম্যারাডোনার অহেতুক কর্মকাণ্ডের জন্য। শুধু তাই নয়, ফিফার নির্ধারিত ভিআইপি বক্সে বসে চুরুট টানা, দক্ষিণ কোরিয়ান সমর্থকদের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করা ইত্যাদি কারণে ক্ষমাও চাইতে হয়েছিল ম্যারাডোনাকে। এছাড়া নাইজেরিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচে দুই হাতের মধ্যমা আঙ্গুল প্রদর্শন করেও সমালোচিত হয়েছেন ম্যারাডোনা।

বিজ্ঞাপন

ইংল্যান্ড-কলম্বিয়া ম্যাচের পর ফিফার নিয়োগ দেওয়া রেফারি গেইগারকে নিয়ে ম্যারাডোনা বলেন, এটি ছিল ‘স্মরণীয় চুরি’। আজ একটা বিশাল ডাকাতি দেখলাম। এ ব্যাপারে আমি পরিষ্কার। কলম্বিয়ার জনগণের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। কলম্বিয়ার মানুষের বোঝা উচিত, এই হারের জন্য তাদের দেশের ফুটবলাররা দায়ী নয়। রেফারি গেইগারের সমালোচনা করে ফিফার দূত ম্যারাডোনা আরও যোগ করেন, ইংল্যান্ডের কেইন নিজেই ফাউল করেছিল। আমি বলব, দোষটা পুরোপুরি কেইনের। সে নিজেই কলম্বিয়ার সানচেজকে জড়িয়ে ধরে এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে পড়ে যায়। অথচ রেফারি অন্য দিকে তাকিয়ে ছিল। গেইগার কেন ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য নিলেন না, তা আমার বোধগোম্য নয়। এই রেফারি হয়তো বেসবল নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারে। কিন্তু ফুটবল নিয়ে সে কিছুই জানে না। না হলে ভিএআর চাইবে না কেন? আসলে এই রেফারিকে যে নিয়োগ দিয়েছে তাকেই দোষারোপ করতে হবে। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গেইগারকে দায়িত্ব দেয়া উচিৎ হয়নি। তাকে অবশ্যই কলম্বিয়ার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আমি ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফানতিনোকে বলেছি আমি যদি ফিফার হয়ে কাজ করতাম তবে সবকিছুই পরিবর্তন করে ফেলতাম।

ম্যারাডোনার এমন মন্তব্যের পর ফিফা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ম্যারাডোনার যুক্তি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তার কথাগুলো ছিল ‘সম্পূর্ণরূপে অনুপযুক্ত এবং সম্পূর্ণ অসত্য। যে খেলোয়াড় ফুটবল ইতিহাসকে নতুন করে লিখেছিল তার কাছ থেকে এমন মন্তব্য আসায় ফিফা সত্যিই দুঃখ প্রকাশ করছে।

পরে সমালোচনা আর তিরস্কারের মধ্যে বাধ্য হয়েই ম্যারাডোনা ক্ষমা চান, ‘ফিফা এবং ফিফার প্রেসিডেন্ট ইনফানতিনহোর কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আমার মত ভিন্ন হয়। তবে সেই ম্যাচের রেফারীদের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান রয়েছে। বিশ্বকাপের মতো আসরে ম্যাচ পরিচালনা করা সহজ কাজ নয়।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমআরপি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন