বিজ্ঞাপন

সার্ক না ‘বিবিআইএন’?

July 8, 2018 | 9:02 am

।। এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে সার্ক (দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা) কার্যকর করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই অঞ্চলের বোদ্ধারা। তবে তাদেরই কেউ কেউ মনে করছেন, সার্ক বর্তমানে মৃত, তাই বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) প্ল্যাটফর্মকে এখন কাজে লাগানো উচিত।

সার্ক না ‘বিবিআইএন’ এ নিয়ে দ্বিমত থাকলেও একটি বিষয়ে ঐক্যমতে রয়েছেন এই বোদ্ধারা। তাদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার ‘লিলিপুট’ অর্থনীতির দেশগুলোকে ইউরোপ বা আমেরিকার মতো ‘গালিভার’দের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে এক ছাতার নিচে আসতে হবে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সম্পর্ক গড়তে হবে।

সাবেক কূটনীতিক তারেক করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সার্ককে অনেকে এখন মৃত বলছেন কিন্তু সার্ক মৃত না। তবে সার্ক কার্যকর হতে সময় লাগবে। ভারত-পাকিস্তান সমস্যা যতোদিন টিকে থাকবে ততোদিন সার্ক কার্যকর হবে না। দুইটা বড় দেশ যদি এক ছাতার নিচে আসতে না পারে তবে আঞ্চলিক এই সংস্থাটি কাজ করতে পারবে না।’

বিজ্ঞাপন

তাই বর্তমানে ‘বিবিআইএন’ (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগানো উচিত এমন মন্তব্য করে তারেক করিম সারাবাংলাকে বলেন, “আমি ‘বিবিআইএন’কে এখন সার্ক থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ সার্ক থেকেই বিবিআইএন এসেছে। এটা একটা উপ-আঞ্চলিক সংস্থা। বিবিআইএন উন্নয়নের দৃষ্টান্ত উপস্থান করতে পারলে পাকিস্তানের জনগণের মধ্য থেকে প্রশ্ন উঠবে যে ওরা (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান) পারলে আমরা পারবো না কেন? তখন সার্ক জেগে উঠবে।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) গত ৪ ও ৫ জুলাই দু’দিনব্যাপি একটি সেমিনারের আয়োজন করে। ওই সেমিনারে বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার বোদ্ধারা ছিলেন। তাদের অধিকাংশই বলেছেন, ‘উন্নয়নের জন্য সার্ক এর বিকল্প নেই।’

ওই সেমিনারে অংশ নেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশি দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সম্পর্ক গড়তে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভয় ও অবিশ্বাস কাজ করে। এই অবিশ্বাস আর ভয়ের প্রপাগান্ডার জন্য আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি এবং পিছিয়ে পড়ছি।’

বিজ্ঞাপন

শ্রীলঙ্কার রিজিওনাল সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক গামিনী কিরাওয়ালা বলেন, ‘বিশ্ব বাণিজ্যের প্রেক্ষাপটে গালিভার টাইপের দেশগুলোকে মোকাবেলা করে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে দক্ষিণ এশিয়ার লিলিপুট (অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে) রাষ্ট্রগুলোকে আঞ্চলিক সংযোগের ছাতায় আসতে হবে। আর এই জন্য সার্ককে জেগে উঠতে হবে। এজন্য পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন। তা না হলে এই অঞ্চলের শতভাগ উন্নয়ন সম্ভব হবে নয়।’

তবে নয়াদিল্লির ফোরাম ফর স্ট্র্যাটেজিক ইনিশিয়েটিভের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল দীপংকর ব্যানার্জী ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে সার্ক গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সার্ক এখন মৃত। তাই এই অঞ্চলের উন্নয়নে এখন বিআরআই এবং বিবিআইএন এর প্রতি মনোযোগী হতে হবে।‘

সাবেক বাণিজ্য সচিব সোহেল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগ এবং উন্নয়নের জন্য সবার আগে প্রয়োজন মানসিক এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।’

সারাবাংলা/জেআইএল/এমও

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন