বিজ্ঞাপন

নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বাড়ল

July 8, 2018 | 6:46 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনী বিল আজ রোববার (৮ জুলাই) পাস হয়েছে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচনের বিধানের মেয়াদ ২৫ বছর বাড়িয়ে এ সংক্রান্ত বিলটি পাস হলো। রোববার (৮ জুলাই) বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে সরাসরি ভোটে বিলটি পাস হয়। তার আগে বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

এর আগে ৬ জুন সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের বিধান আরও ২৫ বছর বহাল রাখতে সংসদে উত্থাপিত সংবিধান সংশোধনী বিলের প্রতিবেদন দেয় সংসদীয় কমিটি। বিলটি পাশের সুপারিশ করে বুধবার সংসদে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন খসরুর পক্ষে কমিটির সদস্য শামসুল হক টুকু এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

এর আগে ১০ এপ্রিল সংবিধানে সপ্তদশ সংশোধনী আনতে একটি বিল সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে এটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিজ্ঞাপন

২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ করা হয়। তবে ওই সময় মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী, ৩৫০ জন সংসদ সদস্য নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ৩০০ জন এবং সংসদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে ৫০ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সংবিধানের ৬৫ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘সংবিধান (চতুর্দশ সংশোধন) আইন, ২০০৪ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হতে শুরু করে দশ বৎসর কাল অতিবাহিত হইবার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভাঙিয়া না যাওয়া পর্যন্ত পঞ্চাশটি আসন কেবল মহিলা-সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে।’

২০০৪ সালে তদানীন্তন অষ্টম জাতীয় সংসদে সংবিধান সংশোধন করে নারী সদস্যের জন্য সংরক্ষণ করা ৪৫টি আসন সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টনের ব্যবস্থা করা হয়। তখন এর মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয় পরবর্তী সংসদের অর্থাৎ, নবম সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে দশ বছর। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেই হিসেবে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের মেয়াদ আছে ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলে সংশোধনীটি না হলে নতুন সংসদ এলে নারী সংসদ সদস্য নির্বাচন করা যাবে না। সংবিধান সংশোধন করতে হলে সংসদ সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগে। সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাতে আছে ২৩২টি আসন।

বিজ্ঞাপন

সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধন হয়েছিল ২০১৬ সালে। ওই সংশোধনে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। পরে সর্বোচ্চ আদালত ওই সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেয়। ওই রায়ের পুনর্বিবেচনা করার আবেদন করেছে সরকার।

এর আগে ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন, ২০১৮’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা কম ছিল, ২০১১ সালে ওটা বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে। সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে আবার নতুনভাবে মেয়াদ কার্যকর করার জন্য প্রস্তাবটা আনা হয়েছে। এই ৫০টি আসন আগামী ২৫ বছরের জন্য আবার সংরক্ষিত থাকবে। ওই সময় ২৫ বছরের ব্যাখ্যায় শফিউল বলেন, এটা এমনভাবে হবে যে পরবর্তী সংসদের অর্থাৎ একাদশ সংসদের প্রথম বৈঠক (অধিবেশন) থেকে শুরু করে আগামী ২৫ বছর পর্যন্ত সংসদ না ভেঙে যাওয়া পর্যন্ত এই ৫০টি আসন সংরক্ষিত থাকবে।

সারাবাংলা/এনআর/জেএএম

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন