বিজ্ঞাপন

৩ সিটি নির্বাচনে কঠোর হচ্ছে ইসি

July 10, 2018 | 7:56 am

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নতুন কোনো বির্তকে জড়াতে চাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর সৃষ্টি হওয়া ইমেজ সংকট কাটাতে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপও হাতে নিয়েছে ইসি।

সামনের নির্বাচনগুলোতে পুলিশ যাতে প্রার্থীর নেতা-কর্মী ও এজেন্টদের হয়রানি করতে না পারে সে বিষয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে কমিশন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। এ ছাড়াও পুলিশি হয়রানি বন্ধে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টদের অগ্রিম তালিকা সংগ্রহ করবে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন সোমবার (৯ জুলাই) তার কার্যালয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সবাত্বক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম এবং অনেকটাই সফল হয়েছি। তারপরেও সেখানে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচনে যাতে এই ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা কাজ শুরু করেছি।’

বিজ্ঞাপন

বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন আরও বলেন, ‘তিন সিটিতে নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনী এলাকায় বিনা ওয়ারেন্টে পুলিশ যাতে কাউকে গ্রেফতার করতে না পারে সে জন্য কমিশন থেকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়াও কোনো প্রার্থীর এজেন্টকে পুলিশ যাতে হয়রানি করতে না পারে তার ব্যবস্থা করা হবে। নির্বাচনের ২ থেকে ৩ তিন আগে প্রার্থীদের কাছ থেকে তাদের এজেন্টদের তালিকায় সংগ্রহ করবো। পরবর্তীতে এজেন্ট তালিকায় নাম থাকা কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ হয়রানি বা গ্রেফতার করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনের আগামী সভায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে প্রার্থীর এজেন্টদের তালিকা সরবরাহ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আমি অনুরোধ করবো এজেন্ট তালিকায় কোনো ওয়ারেন্টভুক্ত মামলার আসামীকে যেন না রাখে। কারণ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করলে আমাদের কিছু করার থাকবে না।’

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর মাসে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তার আগে চলতি মাসের ৩০ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তিন করপোরেশন নির্বাচনের পর এবং ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে বড় কোনো নির্বাচন নেই। ফলে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নতুন করে কোনো বির্তকে জড়াতে চাচ্ছে না কমিশন।

বিজ্ঞাপন

খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুলিশের হাতে বিরোধী দলের প্রার্থীর নেতা-কর্মী ও এজেন্টদের হয়রানি এবং পুলিশ সহায়তায় জালভোটের অভিযোগ উঠলেও তা বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। পরপর দুটি নির্বাচনে অব্যাহত সমালোচনার মুখে নড়েচড়ে বসে বাধ্য হচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ইসির যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছিল খুলনা ও গাজীপুর সিটিতে কমিশন তা ধরে রাখতে পারেননি। এই অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন করার বিষয়ে ইসির সক্ষমতা এবং আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বর্তমান কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব না বলে দাবি করছেন। দলগুলোর পক্ষ থেকে কমিশন পুর্নগঠনের দাবিও তোলা হয়েছে।

দুই সিটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার কারণে বর্তমানে বেশ চাপের মুখে রয়েছে কমিশন। ফলে আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করা ইসির জন্য বড় ধরনের অগ্নি পরীক্ষা। এই অবস্থায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সর্বাত্বক চেষ্টা করছে ইসি। আগামী তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ওপর অনেকটা নির্ভর করছে—বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধিনে সবগুলো দল জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে কি-না।

সারাবাংলা/জিএস/এমআই

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন