বিজ্ঞাপন

বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় আতঙ্কে রোহিঙ্গারা

July 10, 2018 | 10:16 am

।।ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার: চলতি বর্ষায় বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় পাহাড় ধসের আতঙ্কে রয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। গত এক মাসে বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিশুর মৃত্যু ও ৩০ জন আহত হয়েছে।

বন্যা ও পাহাড়ধসের আতঙ্কে পাহাড়ের বসবাসরত হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবার। অতি ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরো ভয়াবহ পাহাড়ধস ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

জানা গেছে, বর্ষা শুরুর পর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় কমপক্ষে ২০টির অধিক ছোট-বড় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। মাঠির দেয়াল চাপায় এক শিশুর মৃত্যুসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সৃষ্ট পানির ঢলে ২ হাজার ঝুঁপড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বষার্য় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা এড়াতে নানা চাহিদা থাকলেও চরম বিপদের সময় বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়ে কৃতজ্ঞতার প্রকাশ করেছেন রোহিঙ্গার।

বিজ্ঞাপন

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশ্রিত রোহিঙ্গা সুরত আলম জানান, পাহাড়ের মাঠি পড়ে তার ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। ওই জায়গায় নতুন করে ঘর তৈরি করলেও তার আতঙ্ক কাটছেনা। এছাড়া বৃষ্টির পানির ঢল তার ঘরে ঢুকে যায়। এ অবস্থায় তিনি পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছেন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রাবেয়া খাতুন খানান, ‘আমাদের এই বিপদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। খেতে দিয়েছে, পরতে দিয়েছে। বৃষ্টি থেকে বাচাঁর জন্য শক্ত ঘর দিয়েছে। আর এতকিছু দেওয়ার পরেও যদি কেউ অসন্তুষ্ট থাকে তাহলে কিছুই করার থাকেনা।’

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করে ক্যাম্পের পাশ্ববর্তী নিরাপদস্থানে সরিয়ে ফেলার কাজ অব্যাহত রয়েছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।’

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, বর্ষায় ঝুঁকি এড়াতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পানি জমে না থাকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে সেল্টার উপকরণ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

এ দিকে রোহিঙ্গারা পাহাড় কেটে বসতি গড়ার পাশাপাশি জ্বালানি কাঠের জন্য পার্শবর্তী সংরক্ষিত বন কেটে উজাড় করেছে। এতে পাহাড়ের উপরিভাগের শক্তি কমে যাওয়ায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, আজকের এই পরিস্থিতির জন্য রোহিঙ্গারাই দায়ী। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে আশ্রয় দিলেও তারা এর মর্যাদা রাখেনি। তারা নির্বিচারে পাহাড় কেটেছে। উজাড় করেছে বন। যার ফলে এই ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন