বিজ্ঞাপন

ক্ষমতায় এলে খালের ওপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করব: প্রধানমন্ত্রী

July 12, 2018 | 10:12 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামীতে আবার যদি সরকার গঠন  করতে পারি তাহলে রাজধানীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বক্স কালভার্টগুলো ভেঙ্গে উন্মুক্ত করে খালের ওপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করে দেবো। যেখানে উপরে রাস্তা, নিচে খাল থাকবে।

বৃহস্পতিবার (১২) জুলাই দশম জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি একথা বলেন। তার আগে বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়। এরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের মূলতবি হয়।

রাজধানীর জলাবদ্ধতা সংকট নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মতিঝিলে বিশাল ঝিল ছিল। এখন কারও মনে নেই। এখনকার কেউ জানেও না। কিন্তু আমরা ছোট বেলায় নৌকায় চড়ে ওই ঝিল পার হয়েছি।  আইয়ুব খান ক্ষমতায় এসে মতিঝিলের সেই ঝিল বন্ধ করে দিল।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও সেগুনাবাগিচা, শান্তিনগর ও পান্থপথের খালের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এই যে পান্থপথ যেখানে, সেখানে একটি খাল ছিল এবং বিল ছিল। আর ধলাই খাল? কে বন্ধ করেছে। জেনারেল এরশাদ সাহেবের মাথায় ঢুকল বক্স কালভার্ট? তিনি বানালেন বক্স কালভার্ট, সেই বক্স কালভার্টের রেজাল্টটা কি, জলাবদ্ধতা।

কারণ আগে যেখানেই বৃষ্টির পানি হতো পানিটা খালের মধ্যে পড়ত। পান্থপথের যে খালটা একেবারে হাতিরঝিল থেকে ধানমন্ডি লেকের সাথে সংযোগ ছিল। সেখানে বড় বড় নৌকাও আসত বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

বক্স কালভার্ট করার ফলাফলে আশপাশে যত জায়গার পানি সে পানি আর নামতে পারে না। তাহলে পরিবেশটা নষ্ট করল কে? প্রশ্ন উত্থাপন করেন শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর যেখানে যত পুকুর ছিল একে একে সব পুকুরের ভিতর দিয়ে বড় বড় দালান কোটা উঠে গেছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আসার পরে, অনেকগুলি নিজে ঠেকিয়ে রেখেছি। আমাদের সময়ে এইরকম কাজ করতে দেইনি। ইচ্ছা আছে, আল্লাহর রহমতে যদি আবার আসতে পারি, আর যদি বাংলাদেশের ভাল টাকা পয়সা (আর্থিক উন্নতি) হয়; এই বক্স কালভার্টগুলো ভেঙে এগুলো উন্মুক্ত করে দেব। আর আমার একটি প্ল্যান আছে, খালের ওপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করে দেব। রাস্তা থাকবে, কোনো অসুবিধা নাই, কিন্তু নিচে খাল থাকবে। খালে যেমন নৌপথে যাতায়াতের সুযোগ থাকবে, বিনোদনেরও ব্যবস্থা থাকবে; জলাবদ্ধতাও দূর হবে। আর ওপর দিয়ে এলিভেটেড রাস্তা করে দেব।

আশা করি, এটা বিরোধী দলীয় নেতার পছন্দ হবে না দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওনার বললাম না, জেনারেল এরশাদ সাহেবেরই এই অপকর্মের ফলে এই অবস্থা?’

হাইকোর্টের সামনে বিশাল বটগাছ ছিল। হাইকোর্টের ভিতরে একটা পুকুর ছিল ‘রানীর দিঘি’ নামে। সেই পুকুরের চারদিক দিয়ে গাছ ছিল। সেই পুকুরটা ভরাট করেছে কে? জেনারেল এরশাদ সাহেব। সেই পুকুর ভরাট করে দিয়ে সেখানে ঈদগাহ করে দিয়েছে। তাহলে ওই জায়গার পানিটা যাবে কোথায়। সেই ব্যবস্থা করে নাই। আমি এসে ড্রেনেজ সিস্টেমটা করি।

পুরনো এয়ারপোর্ট তেজগাঁও থেকে বাংলা একাডেমী পর্যন্ত আইল্যান্ডের ভিতরে কৃঞ্চচ’ড়া গাছ থাকার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, গাছগুলো জিয়াউর রহমান কেটে ফেলেছে? কেন, ক্যান্টেনমেন্ট থেকে বের হলে গাছের ওপর থেকে তাকে নাকি মারবে? কৃঞ্চচূড়ার ডাল এমনিই নরম। ওখানে উঠে বসে কারও গুলি করা, এটা সম্ভব নয়। সমস্ত গাছ কেটে ফেলে দিয়েছে। এরকম আরও বহু দৃষ্টান্ত আমি ঢাকা শহরে দেখাতে পারব।

বিজ্ঞাপন

কারও নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট বন্ধ হবে না কেন? সমস্ত খালগুলো বন্ধ। তিনশো ফিট রাস্তা করার দুইপাশে একশো ফিট করে খাল করা; সেই খাল খুড়তে গিয়ে কত রকমের বাধা। খুব বড় বড় মহারথীরা। যাদের বিশাল টাকা হয়ে গেছে। আমি বললাম ও সমস্ত কিছু শুনতে চাই না, সব কেটে খাল করতে হবে। খাল করে দিচ্ছি এবং সেখানে সুন্দর রাস্তা করে দিচ্ছি।’

 সারাবাংলা/এনআর/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন