‘শত নির্যাতনেও বঙ্গবন্ধুকন্যার নামে মিথ্যা মামলা দেইনি’

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য ক্যান্টনমেন্টে নির্যাতনের শিকার হলেও তাতে নতি স্বীকার করেননি বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য বীরপ্রতীক গোলাম দস্তগীর গাজী, এমপি।

তিনি বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের সময় ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমি তাদের বলেছি, আমি বঙ্গবন্ধুকন্যার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের মিথ্যা মামলা দেবো না, আমি মামলা দেইনি।’

আজ রোববার (১৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘ব্যবসায়ী পরিচয়ের কারণে তার কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে শেখ হাসিনা আমাকে নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন—এমন মিথ্যা অভিযোগে মামলা করতে বলেছিল ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবরা। আমাকে ফোর্স করা হয়েছিল। ক্যান্টনমেন্টে আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে কয়েকদিন ধরে টানা নির্যাতন করা হয়েছিল। কিন্তু এত নির্যাতনের পরও আমি এমন মিথ্যা অপবাদ দিতে রাজি হইনি।’

তিনি বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলেছি এবং এখনও বলছি, শেখ হাসিনা কোনো ধরনের মনোনয়ন বাণিজ্যের সাথে জড়িত নন। আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে তিনি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। তাই তার নামে মিথ্যা মামলা করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, আমাকে ক্যান্টনমেন্টে রেখে টর্চার করা হয়েছে। অথচ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সেই ক্যান্টমেন্ট আমরাই স্বাধীন করেছি, এই দেশকে আমরাই স্বাধীন করেছি।

দেশের উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কাজ করেছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল ও বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি বলেন, ‘নারীদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা যেভাবে গত ৯ বছর কাজ করেছেন, তা বিস্ময়ের। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। সেই নারীদের মর্যাদা ও ক্ষমতা যেন অক্ষুন্ন থাকে, সে বিষয়ে তিনি সবসময় জোরদার নির্দেশ দিয়ে থাকেন।’

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেন, ২০০৮ সালের ১১ জুন জনগণের চাপে সেই সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিয়েছেন। আর মুক্তি দিয়েছেন বলেই আজকে আমরা এই জায়গায় আসতে পেরেছি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে আটকে রেখে গণতন্ত্রের পথ থেকে সরে সাময়িক শাসন তৈরি করার জন্যই তাকে আটকে রাখা হয়েছিলো। আর তখন ‘মাইনাস টু’ বলা হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ‘মাইনাস ওয়ান’ করতে চেয়েছিল।

সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপি প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপিকে মাইনাস করার প্রয়োজন নেই। তারা নিজেরাই নিজেদেরকে মাইনাস করেছে। বেগম জিয়ার দল দুর্নীতি, দুঃশাসন, নাশকতা ও দেশবাসীর ওপর নির্যাতন করায় তাদের অবস্থান এখন তলানিতে। আর এজন্য নিজেরাই এখন মাইনাস হয়ে গেছে।

স্বপ্ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার কবির, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী বনশ্রী বিশ্বাস স্মৃতি, ঢাকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ডা. আবু ইউসুফ ফকিরসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/টিআর