বিজ্ঞাপন

এক জাহাজের কারণে প্রকল্প খরচ বাড়ল তিনবার!

December 25, 2017 | 5:05 pm

জোসনা জামান, স্টাফ করসপনডেন্টঃ

বিজ্ঞাপন

মালয়েশিয়ার কাছ থেকে জাহাজ দেরিতে পাওয়ার কারণে খরচ বেড়ে গেল একটি প্রকল্পের। মেরিন ফিসারিজ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং নামের প্রকল্পের খরচ বেড়ে গেল ৩ দফা। সমুদ্র সম্পদের অবস্থা জানতে মালয়েশিয়া থেকে জাহাজ হস্তান্তরে দেরি হওয়ায় তৃতীয়বারের মতো সংশোধন হচ্ছে প্রকল্পটির। এতে ৫ বছরের জায়গায় প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ দাঁড়াচ্ছে ১২ বছরে।

এই সংশোধনী প্রস্তাব মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি—একনেকে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে। প্রকল্পটি ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক—আইডিবি ও মালয়েশিয়া সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

প্রকল্পের মূল খরচ ছিল ১১৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে খরচ বাড়িয়ে করা হয় ১২৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীতে খরচ বাড়ে ১৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এখন নতুন করে তৃতীয় সংশোধনীতে ৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট খরচ ১৭০ কোটি ২৩ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদও। ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও এখন নতুন প্রস্তাবে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ ধরা হয়েছে। ফলে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে সময় লাগছে ১২ বছর।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য  এ এন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সামুদ্রিক ও উপকূলীয় মৎস্য সম্পদের সঠিক পরিমাণ নিরুপণ, মৎস্য আহরণ ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ, সামুদ্রিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও জৈবিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, অতি আহরণ বন্ধসহ জেলেদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং কাঙ্খিত উৎপাদন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, বর্তমানে প্রস্তাবিত তৃতীয় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রকল্পের সংস্থান অনুযায়ী দেশের সমুদ্র এলাকায় পেলাজিক (উপরের স্তরের মৎস্য সম্পদ) ও ডিমারসাল (তলদেশের মৎস্য সম্পদ) সার্ভে করার জন্য মালয়েশিয়া হতে একটি জাহাজ আমদানি করা হয়েছে। এই গবেষণা ও জরিপ জাহাজটি টার্ণ কী বেসিসে ক্রয় করার ফলে জাহাজ ক্রয়ের বিষয়টি দীর্ঘায়িত হয়। ফলে মূল ডিপিপি অনুযায়ী ২০১৪ সালের জুনের মধ্যে জাহাজ সরবরাহের কথা থাকলেও বাস্তবে তা দুই বছর দেরিতে ২০১৬ সালের জুনে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রকল্পের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৪ সালের জুনে জাহাজ হস্তান্তরের পর দুই বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে জাহাজটি বঙ্গোপসাগরে পেলাজিক ও ডিমারসাল সার্ভে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং পরবর্তী এক বছর ২০১৭ সালে জুনে তথ্য বিশ্লেষণ প্রতিবেদন তৈরি করার বিষয়টি নির্ধারিত ছিল। কিন্তু জাহাজটি দুই বছর দেরিতে সরবরাহ করায় নির্ধারিত পেলাজিক ও ডিমার্সেল সার্ভে এবং ল্যান্ড বেইজড সার্ভে কার্যক্রম অসমাপ্ত রয়েছে এবং এ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ অব্যবহৃত রয়ে গেছে। ফলে প্রকল্পের নির্ধারিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞাপন

(সারাবাংলা/জেজে/জেএএম.২৫ ডিসেম্বর ২০১৭)

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন