বিজ্ঞাপন

‘প্রধানমন্ত্রী ১ ঘণ্টা সময় দিলেই আন্দোলনের কারণ বুঝতেন’

July 19, 2018 | 4:44 pm

।। ঢাবি করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আন্দালনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বললেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের কারণ সহজে বুঝতে পারতেন বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু ‍মুহাম্মদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের সংহতি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলার প্রতিবাদে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ এ সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রোকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭৫জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। এতে বিভিন্ন বিভাগের অন্তত চারশতাধিক শিক্ষার্থী সংহতি জ্ঞাপন করেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আপনি যদি শিক্ষকদের সঙ্গেও কিছু সময় কথা বলতেন কিংবা তাদের লেখা-কথাবার্তা আপনি শোনার চেষ্টা করতেন। তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পারবেন এই দাবিগুলো জমানো ক্ষোভ থেকে এসেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাকরির জন্য লাখ লাখ টাকা খুঁজতে হয়। তাহলে সেই বাবা-মা কোথায় যাবেন? লেখাপড়া শেষ করে চাকরি না পাওয়ার অনিশ্চয়তা দিন দিন বাড়ছে। সরকারের যদি ন্যূনতম সংবেদনশীলতা থাকত ছাত্ররা কেন এই আন্দোলন করছে তাহলে খুব সহজেই বুঝতে পারতেন। সরকারের ধারণা, ধমক দিয়ে চাপ দিয়ে অত্যচার-নির্যাতন করলে ক্ষোভ-অসন্তোষ চলে যাবে। কিন্তু সেটা তো যায় না। প্রতিবাদগুলো ভেতরে ভেতরে থেকে যায়। সেটারই প্রকাশ হয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনে।’

জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বহুধরনের বিপদের মধ্যে আছে। তার মধ্যে একটা বড় বিপদ হলো পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়ন্ত্রণ করেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষকদের এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় যারা নিজেরা কোনো চিন্তা না করে, আত্মসম্মান জলাঞ্জলি দিয়ে উপরের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রসীদের রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করবেন।’

বিজ্ঞাপন

মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাকে ছাত্রলীগের একটা তকমা দেওয়া হয়েছিল যেটা নিয়ে আমি গর্ববোধ করতাম। এখন মনে হয় ছাত্রলীগ একটা গালি; সত্যিকারে। আমি মনে করেছিলাম শহীদ মিনারে আমিও যাব। কিন্তু আমার হাত-পা ভাঙা । তখন মনে হয়েছে যদি ওরা মারতে শুরু করে তাহলে আমি কি আমাকে সামলাতে পারব? কী রকম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আছি, আমরা চিন্তা করতে পারছি না।

সংহতি সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন বলেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তির আস্বাদ দেওয়ার কথা, সেই বিশ্ববিদ্যালয়কে কারাগার বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসর যেখানে ইতিহাস রচিত হয়েছে, বিভিন্ন আন্দোলনের সাক্ষী, সেই ইতিহাসকে অস্বীকার করে যারা কারাগার বানিয়ে তুলছে তাদের বিপক্ষে আমাদের বলতেই হবে। আমাদের নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা, পরিসরের জন্য আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।’

সংহতি সমাবেশ থেকে একটি মৌন মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কলাভবন-ডাকসুভবন ঘুরে আবার অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এসে শেষ হয়।

সারাবাংলা/কেকে/একে

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন, হামলায় দায়ী ছাত্রলীগ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন