বিজ্ঞাপন

৩ সিটিতে ৪ দিন মাঠে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

July 22, 2018 | 8:29 am

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট চার দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী— এই তিন সিটি নির্বাচনে ভোটের আগের দুই দিন থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে নামানো হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এ ছাড়াও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে ২৪ জন এবং সাধারণ ভোটকেন্দ্রে (ঝুঁকিমুক্ত) ২২ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন।

এ ছাড়াও নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে রাজশাহীতে ১০ জন, বরিশালে ১০ জন এবং সিলেট সিটি করপোরেশনে ৯ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী ঘুরে এসেছেন তিন নির্বাচন কমিশনার। তারা সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন যেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন  করা হয়। এ ছাড়া রাজধানীতে ইসি সচিবালয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বৈঠক করা হয়েছে। ইসি সূত্র সারাবাংলা’কে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ সারাবাংলা’কে বলেন, ‘সিলেট, বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ইসির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে যেন কেউ কোনো ধরনের অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নজরদারি করার নির্দেশ দেওয়া আছে। এ ছাড়াও নির্বাচনে ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষকরা মাঠে থাকবেন।’

বিজ্ঞাপন

ইসি সূত্র জানায়, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচনে ১৮ জন মেয়র প্রার্থীসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মোট ৫৪৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৮১ জন এবং নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৪৯ জন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে তিন সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স এবং প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের টিম এবং বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হবে।

এ ছাড়াও রাজশাহীতে ১৫ প্লাটুন, বরিশালে ১৫ প্লাটুন ও সিলেটে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের দুই দিন আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরে একদিন— সব মিলিয়ে মোট চার দিন মাঠে থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র‌্যাব, পুলিশ ও কয়েক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে। এ ছাড়াও গত ১০ জুলাই থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রতি তিন ওয়ার্ডের জন্য একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

ইসি সূত্র জানায়, তিন সিটিতে আগামী ২৮ জুলাই মধ্য রাত থেকে শেষ হচ্ছে নির্বাচনের সব ধরনের প্রচারণা। সে সঙ্গে নির্বাচনী এলাকায় ওইদিন রাত ১২টা থেকে সব ধরনের যান চলাচলেও বিধিনিষেধ আরোপ থাকছে। কমিশনের অনুমোদিত স্টিকারবিহীন মোটরসাইকেল চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে প্রধান সড়কে (হাইওয়ে) গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এ ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও ডাক বিভাগের গাড়ি এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে। ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (রাসিক) মেয়র পদে প্রার্থী পাঁচ জন। তারা হলেন— আওয়ামী লীগের (নৌকা) এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপির (ধানের শীষ) মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (কাঁঠাল) মু. হাবিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও গণসংহতি আন্দোলনের (হাতি) অ্যাডভোকেট মুরাদ মুর্শেদ।

নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৬০ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৫২ জন নারী কাউন্সিলর প্রর্থী অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন সৈয়দ আমিরুল ইসলাম।

সিলেট

বিজ্ঞাপন

সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাত প্রার্থী হলেন—   আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান, বিএনপির মো. আরিফুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম, জামায়াত ইসলামীর এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিপিবি-বাসদের আবু জাফর, এহসানুল হক তাহের ও ইসলামী শাসনতন্ত্রের প্রার্থী ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন।

এই নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৭ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পাালন করছেন মো. আলিমুজ্জামন।

বরিশাল

বরিশালে মেয়ার পদে ছয় জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ৯৪ জনও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন— আওয়ামী লীগের (নৌকা) সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, বিএনপির (ধানের শীষ) মজিবর রহমান সারোয়ার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, সিপিবি’র (কাস্তে) অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, বাসদের ডা. মনীষা চক্রবর্তী ও জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) ইকবাল হোসেন।

নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন মুজিবুর রহমান। বরিশাল সিটিতে মোট ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২১ হাজার ৩৩২ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৬২৭ জন।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন