বিজ্ঞাপন

‘বিকট শব্দে চাকা ফেটে যায়, বাঁচার মতো পরিস্থিতি ছিল না’

July 24, 2018 | 3:14 pm

।। জাকিয়া আহমেদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘বেঁচে থাকার মতো কোনো অবস্থা ছিল না। আমাদের সবার মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। আমরা যারা ছিলাম, তাদের ওপর রহমত ছিল বলেই হয়তো আজকে বেঁচে বাসায় ফিরতে পেরেছি।’

কথাগুলো সারাবাংলা’কে বলছিলেন থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২১ ফ্লাইটের যাত্রী বিলাস দাস। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি ছিলেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় চাকা ফেটে দুর্ঘটনার কবলে পড়া ওই ফ্লাইটে।

বিজ্ঞাপন

বিলাস দাস বলেন, ‘আমাদের বিমানটি রানওয়েতে নামতে গিয়েও নামতে পারেনি। নামার আগেই পাইলট আবার বিমানটি নিয়ে ওপরে উঠে যান। পরপর তিনবার এই ঘটনা ঘটে। আমার সিট ছিল একদম চাকার ওপরে। স্পষ্ট দেখতে পাই, চাকা মাটিতে পড়ে গেছে।’

বিলাস আরও বলেন, বিমানবন্দরে প্রথমবার নামতে যাওয়ার সময় থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতো বিমানটি আকাশে ছিল। বারবার চেষ্টা করেও বিমানটি ল্যান্ড করতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত খুব ঝুঁকি নিয়ে যখন বিমানটি ল্যান্ড করে, তখন বিকট শব্দ তৈরি হয়। পুরো এয়ারপোর্ট কেঁপে ওঠে।

বেঁচে থাকার স্বস্তি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ওই অবস্থায় আমাদের বেঁচে থাকার কোনো পরিস্থিতিই ছিল না। ফ্লাইটে আমরা যারা ছিলাম, তাদের সবার মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছি।

বিজ্ঞাপন

থাই এয়ারওয়েজের উড়োজাহাজের ফেটে যাওয়া একটি চাকা; এভাবেই বিধ্বস্ত হয় সবগুলো চাকা

মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ঘটনাপ্রবাহের রেকর্ড নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিলাস। তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছিলাম আমরা বাঁচতে পারব না। তখন সিদ্ধান্ত নেই, মরেই তো যাবো, কিন্তু মৃত্যুর আগে এই ঘটনার রেকর্ড রাখি। আমি মোবাইল চালু করে সব ইনফরমেশন নিতে থাকি। আমি চাকার ছবি তুলেছি। ওই চাকায় কিচ্ছু নেই।’ এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবি বিলাস দাসই দিয়েছেন সারাবাংলা’কে।

বিলাস জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী এবং ৭ বছর ও ৩ বছর বয়সী দুই সন্তান। সবাইকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত নিরাপদে উড়োজাহাজ থেকে বেরিয়ে আসতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ব্যাংকক থেকে ছেড়ে আসা থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২১ ফ্লাইটটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। চাকা ফেটে যাওয়ায় উড়োজাহাজটি স্বাভাবিক অবতরণ করতে পারেনি। সকাল ১১টা ৫৮ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা থাকলেও একাধিকবার চেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে অবতরণ করতে সক্ষম হয়। বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও ওই ফ্লাইটের যাত্রীরা সবাই নিরাপদেই নেমে আসতে পেরেছেন। এ ঘটনায় তিন ঘণ্টা শাহজালাল বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

থাই এয়ারের চাকা ফেটে জরুরি অবতরণ, শাহজালালে রানওয়ে বন্ধ

সারাবাংলা/জেএ/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন