বিজ্ঞাপন

জনকল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাজেট ঘোষণা

July 25, 2018 | 7:43 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ধর্ম ও অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে বিনামূল্যে দাফন ব্যবস্থা ও বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের পরিকল্পনা সামনে রেখে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার ৫৯৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।

নগর ভবনের ব্যাংক ফ্লোর সম্মেলন কক্ষে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বুধবার (২৫ জুলাই) এ বাজেট ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন নগরের দায়িত্ব নেই তখন রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরা ছিল, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বেহাল দশা ছিল, কোষাগার ঋণভারে জর্জরিত ছিল। সে অবস্থা থেকে নগরকে উন্নত করার চেষ্টা করছি আমরা। গত তিন বছরে রাস্তা ও ফুটপাথ নির্মাণ, নর্দমা সংস্কার ও মেরামত, এলইডি বাতি সংযোজন, পাবলিক টয়লেট নির্মাণসহ অনেক উন্নতি করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সিটি করপোরেশনের কর্মকাণ্ডে নাগরিক সম্পৃক্ততার কারণে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা এসেছে, এর জন্য নাগরিকদের ধন্যবাদ জানান মেয়র সাঈদ খোকন।

চলতি অর্থবছর ডিএসসিসি’র নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ৯০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। মেয়র জানান, এই অর্থবছরে নিজস্ব আয়ের অন্যতম খাত হোল্ডিং কর। এ বাবদ ৩৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও বাজার সেলামি বাবদ আয় ধরা হয়েছে ৩০৫ কোটি টাকা, বাজার ভাড়া বাবদ ৩০ কোটি টাকা ও ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ ৮০ কোটি টাকা।

এ ছাড়াও বিজ্ঞাপন কর বাবদ ৫ কোটি,  রাস্তা খনন ফি বাবদ ২৮ কোটি টাকা, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা বাবদ ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বাস-ট্রাক টার্মিনাল থেকে ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ৫ কোটি টাকা, শিশু পার্ক থেকে ৫ কোটি টাকা, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া বাবদ ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সম্পত্তি হস্তান্তর বাবদ একশ কোটি টাকা ও ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সরকারি মঞ্জুরি খাত থেকে ৭০ কোটি, সরকারি বিশেষ মঞ্জুরি বাবদ ৪৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প খাতে ২ হাজার ৪৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার সাহায্যের সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন মেয়র।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেটের ব্যয়ের খাতগুলো উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, ব্যয়ের খাতগুলো হলো— বেতন ভাতা বাবদ ৩৪০ কোটি টাকা; সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৭৪২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা; ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ/উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৩৯৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা; জ্বালানি, পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বাবদ ১০৯ কোটি টাকা; মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা; মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাবদ ২৬ কোটি টাকা; বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম বাবদ ৭৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা; বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ১৫ কোটি টাকা এবং অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া, কবরস্থান, শশ্মান ঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন খাতে ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও জনসচেতনতা খাতে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ফি বাবদ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা, নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধা উন্নয়ন খাতে ১৪৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ১৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সংস্থার চাঁদা বাবদ ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ বাবদ ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, ল্যান্ডফিল রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন বাবদ ১২১ কোটি ৭২ লাখ টাকা, বাস্তবায়িত প্রকল্পে বকেয়া ম্যাচিং ফান্ড বাবদ ৪৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, নতুন বাজার নির্মাণ বাবদ ২০০ কোটি টাকা, জবাইখানা নির্মাণ বাবদ ৬৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস নির্মাণ বাবদ ৬৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও মাতৃসদন খাতে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ খাতে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে জানান মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন জানান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, একজন মেয়রের এক মেয়াদকালে শহরের সকল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এ শহরে প্রতিদিন ১৬শ মানুষ প্রবেশ করেন। এ শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ। এই শহরকে সুন্দর রাখা সবার দায়িত্ব।

এর আগে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেট ছিল ৩ হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। পরে তা সংশোধন করে ২ হাজার ১৮ কোটি ৩১ লাখ টাকায় আনা হয়।

সারাবাংলা/এমএ/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন