বিজ্ঞাপন

ইসি বলছে ক্ষমা চেয়েছে, অস্বীকার ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের

July 25, 2018 | 9:55 pm

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি। তবে ইসির এমন বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ২৮ সংগঠনের মোর্চাটি।

ইসির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের পরিচালক ড. আবদুল আলিম বুধবার (২৫ জুলাই) রাতে সারাবাংলা’কে বলেন, ‘ইসির কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি কিংবা আমার সংস্থার কোনো লোকজন নির্বাচন কমিশনে ক্ষমা চাওয়ার জন্য যায়নি। ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

এর আগে, বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ নামের একটি এনজিও যে প্রতিবেদন দিয়েছে, আমরা তা তলিয়ে দেখেছি। উনারা পরে ক্ষমা চেয়েছেন যে, আমরা যেভাবে প্রকাশ করেছি সেভাবে নয়। উনারা যেসব কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন, তার অংশটুকু প্রকাশ করেছেন। উনারা আমার কাছে এসে মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন এবং প্রতিটি পত্রিকায় লিখিত প্রতিবাদ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আমার সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, আমাদের ভুল হয়েছে, আমরা ক্ষমা প্রার্থী।’

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইডব্লিউজি পরিচালক ড. আবদুল আলিম বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে ইসি কি কোনো কাগজ দেখিয়েছে? আপনারা উনার কাছে কাগজ চাইতেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ইডব্লিউজি’র পরিচালক হিসেবে বলছি, আমরা ইসির কাছে ক্ষমা চাইব কেন? তারা নাম বলুক, কে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে।’

ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি ইডব্লিউজি করেছে— সে বিষয়ে জানতে রাতে ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদের কাছে ফের জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলা’কে বলেন, ‘ইডব্লিউজি আমার অফিসে এসে গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছে।’

এদিকে, বুধবার বিকেলে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ইসিতে সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ইডব্লিউজি’র কাছে তাদের প্রতিবেদন নিয়ে লিখিত প্রতিবাদ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল আলিম বলেন, আমি এখনও এ বিষয়ে কোনো চিঠি পাইনি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মোর্চা ইডব্লিউজি এর আগে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন বলে অভিহিত করেছিল। তবে গাজীপুরখুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে তারা।

ইডব্লিউজি’র ভাষ্য অনুযায়ী, কিছু বিচ্ছিন্ন সহিংসতা এবং নির্বাচনী অনিয়ম দেখা গেলেও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন মোটাদাগে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সেটি রংপুর সিটি করপোরেশন  নির্বাচনের মতো ভালো হয়নি। খুলনা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে যথাক্রমে চারটি ও ১২টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় তারা। এ ছাড়া, অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারার ঘটনা ২৮টি, ভোট দেওয়ায় বাধার ঘটনা ১৮টি, ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণার ঘটনা ১০টি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ার চারটি ঘটনা ঘটে বলেও জানায় ইডব্লিউজি।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ইডব্লিউজি’র বক্তব্য ছিল, ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। ৪২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ইডব্লিউজি পুরো ৫৭টি ওয়ার্ডের ১২৯টি ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে ১৫৯টি অনিয়মের ঘটনা লক্ষ করেছে বলে জানায়।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন