বিজ্ঞাপন

ভুয়া কর্নেল প্রতারক নাকি অন্যকিছু

November 28, 2017 | 12:10 pm

সারাবাংলা প্রতিবেদক

বিজ্ঞাপন

ভুয়া কর্নেল পরিচয়ে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে প্রতারক আতিকুর রহমান (৫১) আটক হওয়ার পর আদালতের রিমান্ড পায় পুলিশ। রিমান্ডে ওই প্রতারক সম্পর্কে পুলিশ বিস্তারিত জানতে পারে। শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, আতিকের বাড়ি কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার মুন্সি বাড়ি গ্রামে। তার বাবার নাম ছিদ্দিকুর রহমান। তিনি এলাকায় এর আগে জমির দালালি করতেন। সেখানে তিনি ভালো করতে ন পেরে শুরু করেন আদম ব্যবসা। আদম ব্যবসায় অনেক লোকের টাকা মেরে দেওয়ায় বিপাকে পড়ে যান। এরপর নাম লেখান প্রতারণার কাজে। বর্তমানে প্রতারণা করাই তার একমাত্র পেশা।

পরিদর্শক আজাদ বলেন, বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন সূত্রে পরিচয় হন। পরিচয়ের সূত্রে বিভিন্ন মানুষকে উপকার করার কথা বলেন। নিজের পাওয়ার সম্পর্কে ওই সকল লোকদের বোঝান। আরও বেশি কনফিডেন্স বাড়াতে এমনি মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলা, আলাপ করা, জোরালো সম্পর্ক আছে ইত্যাদি বোঝাতেন ওই লোকদের। এ জন্য তিনি মাঝে মধ্যে ওইসব লোকদের সাক্ষী করে বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে কথা বলতেন। মানুষ সহজেই বিশ্বাস করতো যে, হ্যাঁ, তার মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে।

রিমান্ডে থাকা আতিক পুলিশকে বলেন, একজন লোককে চাকরির কথা বলে দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। ওই টাকা নিজেই খরচ করে ফেলেছেন। কিন্তু ওই লোক জানে, টাকাটা একজন মন্ত্রীর হাতে গিয়েছে। ওই লোক বারবার টাকা চেয়ে ফেরত পাননি। তাই তাকে বিশ্বাস করাতে সংসদ ভবনে প্রবেশ করছিলেন। সংসদে প্রবেশ করলেই টাকা পেয়ে যাবেন বলে বিশ্বাস করতেন ওই লোক। তবে ওই ভুয়া কর্নেল সংসদের ভেতরে প্রবেশ করতেন না বলে জানিয়েছেন। এক পাশ দিয়ে গিয়ে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে যেতেন বলে জানান আতিক।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ কর্মকর্তা সারাবাংলাকে আরও বলেন, জাতীয় সংসদে অধিবেশন চলাকালে গত ২৩ নভেম্বর বিকেলে কর্নেল পরিচয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন আতিকুর রহমান। সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিমান বাহিনীর করপোরাল রফিকুল ইসলাম পরিচয় নিশ্চিত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ভুয়া কর্নেল জানার পর তাকে পুলিশ তাকে আটক করে। ওই দিন সংসদে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন। এ জন্য প্রবেশে অনেকটা বেশি কড়াকড়ি আরোপ ছিল।

পরিকল্পনা যদি তার প্রতারণাই হয়ে থাকে, তবে নিরাপত্তা রক্ষীদের ঘুষ দিতে চেয়েছিল কেন? জানতে চাইলে পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কেন ঘুষ দিয়ে সংসদের ভেতরে প্রবেশ করতে চেয়েছিল তা জানি না। তার অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ এর আগে প্রধান মন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের তেল ট্যাংকারের নাট ঢিলে হয়ে তেল ফুরিয়ে যাওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র ধরা পড়েছে। বিমানের অনেক কর্মকর্তা গ্রেফতারও হয়েছেন। দেশের অভ্যন্তরে কোথাও থেকে বিমান নিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলার কথাও এক জঙ্গির স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিও এসেছে আদালতে। কাজেই এই বিষয়টিও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান পরিদর্শক আজাদ।

ওইদিন ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, কর্নেল পরিচয় এমনভাবে দিয়েছে মনে হচ্ছিল আসলেই তিনি একজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। এরপর যখন তিনি ভুয়া প্রমাণিত হলেন তখন তিনি টাকা সাধলেন ঘুষ দিতে। সংসদে কেন তার প্রবেশ করা জরুরী হয়ে পড়েছিল তা কেউ বুঝতে পারেনি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন