August 1, 2018 | 3:36 pm
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর দনিয়া এলাকায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেমে অমানবিকভাবে ট্রাকের নিচে চাপা পড়া শিক্ষার্থী ফয়সাল মাহমুদ আশঙ্কামুক্ত। রাজধানীর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফয়সালে শারীরিক অবস্থা স্থিতীশীল আছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক ডা. সালাউদ্দিন ভূঁইয়া সারাবাংলা’কে বলেন, ফয়সালকে আমি নিজে দেখেছি। ফয়সাল কথা বলতে পারছে। তার পরিবারের সদস্যরাও হাসপাতালে আছেন। তার কোমরের বাঁ পাশের অংশের হাড়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে, কেটে গেছে দুই ঠোঁটের নিচের অংশ। তবে সে এখন ভালো আছে। ফয়সাল হাসপাতালটির কনসালট্যান্ট ও পঙ্গু হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ টি এম বাহারউদ্দিনের অধীনে চিকিৎসাধীন।
ফয়সাল কেমন আছে— জানতে চাইলে এ টি এম বাহারউদ্দিন সারাবাংলা’কে বলেন, আল্লাহর রহমতে বড় রকমের ঝুঁকি থেকে বেঁচে গেছে ফয়সাল। তার অপারেশন নাও লাগতে পারে। তার মাথায় কোনো ইনজুরি নেই, মেরুদণ্ডে আঘাত পেলে প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সেটিও নেই। তার পা টানা দিয়ে রাখা হয়েছে। তাকে মাসখানেক বেড রেস্টেই থাকতে হবে। সেটা হাসপাতালেও হতে পারে, কিংবা অবস্থার উন্নতি হলে বাসায় গিয়েও বেড রেস্টে থাকতে পারে।
তিনি জানান, সাড়ে ১১টার দিকে যখন তাকে হাসপাতালে আনা হয় তখন অজ্ঞান অবস্থায় ছিল ফয়সাল। পরে তার জ্ঞান ফিরলে বমি করেছে। যে লক্ষণটি হেড ইনজুরির লক্ষণ । স্যালাইন শেষ হলে আমরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো বিভাগে পাঠাতে পারি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ফয়সাল নারায়ণগঞ্জের তুলারাম কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিতেই যে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আসে।
আরও পড়ুন-
এর আগে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া এলাকায় শিক্ষার্থীদের অবরোধের সময় ফয়সালকে চাপা দেয় একটি ট্রাক। শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন যানবাহন আটকে তাদের লাইসেন্স পরীক্ষা করছিল। ওই ট্রাককেও একই উদ্দেশ্যে আটকানোর চেষ্টা করলে সামনে দাঁড়ানো নিমেষেই ফয়সালকে পিষে চলে যায় ট্রাকটি। চোখের পলকে ক্ষুদে শিক্ষার্থীর দেহটি পিষে ফেলে দেয় ছুট।
মানবিক বোধ স্তব্ধ করে দেওয়ার এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কাছে। তা দেখে কেবলই বিস্ময়ে মূঢ় হয়ে যেতে হয়, মানুষ এমন হয়!
উল্লেখ্য, গত রোববার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহেনের দুই বাসের রেষারেষিতে হত্যার শিকার হয় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া আক্তার মীম ও আব্দুল করিম। এরপর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এই হত্যার বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। আজ চতুর্থ দিনের মতো তারা নেমেছে রাস্তায়।
আরও পড়ুন-
উত্তাল উত্তরা, শিক্ষার্থীদের দখলে সড়ক
‘শিগগিরই আইন, তোমরা ক্লাসে ফিরে যাও’
ভেটিং শেষে নথি সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে
আজও রাজপথে শিক্ষার্থীরা, গণপরিবহন সংকট
সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন আগামী সপ্তাহেই
সারাবাংলা/জেএ/জেডএফ/টিআর