বিজ্ঞাপন

ওরা রাস্তায় ফেলে রাইফেল দিয়ে মেরেছে : আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী

August 1, 2018 | 10:15 pm

।। সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।|

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আমার মুখ ও চোখের উপর হাত দিয়ে চেপে ধরে ওরা রাস্তায় ফেলে তাদের হাতে থাকা রাইফেল দিয়ে আমার পিঠে ও কোমরে মারতে থাকে। উনারা তিনজন মিলে আমাকে মারতে থাকে। আমার সমস্ত শরীরে মেরেছে, হাঁটুতে মেরেছে, হাতের গিরায় মেরেছে। সে সময় চোখ চেপে ধরায় উনাদের পোশাকের উপর থাকা নামগুলো দেখতে পায়নি।

আজ বুধবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়া এলাকায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যেদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করছিলেন স্কুল শিক্ষার্থী মো. আতিক হোসেন।

তিনি স্থানীয় নবারুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। সড়কে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিচারের দাবিতে রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনির আখড়া এলাকায় বিক্ষোভ করতে অংশ নিলে পুলিশ সদস্যদের হাতে এ নির্যাতনের শিকার হন তিনি। ঘটনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে স্থানীয় দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।

বিজ্ঞাপন

তার অভিযোগ, তাকে মারার সময় তার সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করে গাড়িতে তোলে। পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হলে তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, সাইনবোর্ড এলাকায় শিশু শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতেছে। সেখানে ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা করেছে। এমন ঘটনার খবর পুলিশকে জানাতে আমরা কয়েকজন শনির আখড়ার জোড়াখাম্বার সেখানে একজন পুলিশ অফিসারকে বিষয়টা জানালাম। তাদেরকে বললাম, ‘শিশুদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করছে, আপনারা এখানে বসে আছেন কেনো, সেখানে গিয়ে এটা থামান না কেনো?’ এটা বলার পর আমার উপর হামলা করে প্রায় চারজন পুলিশ সদস্য।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, তারা আমাকে মারধর করতে করতে আমার গায়ের জামা ছিঁড়ে ফেলে। এরপর আমার চোখ মুখ চেপে ধরে রাইফেল দিয়ে কোমরে ও পিঠে বাড়ি মারে। এরপর আমি রোডে পড়ে যায়। পরে এ সময় একটা পিচ্ছি ছেলে এসে আমাকে একটা জামা দিলো এবং একটা রিকসা করে হাসপাতাল নিলো। সেখানে ডাক্তার দেখিয়ে আমি বাসায় যাওয়ার সময় তারা আবার আমারে ধরতে আসে। এ সময় উনি (পুলিশ) আমাকে ধরে নিয়ে এসে কলেজের অফিস রুমে বসায় রাখছে। কিন্তু ডাক্তার বলেছে আমার রেস্ট প্রয়োজন। বাসায় গিয়ে রেস্ট নিতে। উনারা যেতে দিচ্ছে না। তার কাছে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন আছে বলে দাবি করেন ওই শিক্ষার্থী।

এ সময় ওই শিক্ষার্থীর পাশে দাড়িয়ে থাকা যাত্রাবাড়ি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশনস) রাহাত খান সারাবাংলাকে বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়নি। আজকে আমার এ কলেজের সামনে ডিউটি ছিল তাই কলেজে ভেতরে এসেছিলাম। এসে দেখি এ শিক্ষার্থী এখানে বসে আছে। এ কারণে তাকে নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করেছি। আর কিছু না। ওই শিক্ষার্থীর উপর পুলিশের হামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, সেখানে তো সকাল থেকে অনেক ভাঙচুর হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়েছে এটা শুনিনি। তবে ওই শিক্ষার্থী আপনার সামনেই অভিযোগ করেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে গণমাধ্যমকে কোনো কিছু না বলেই সেখান থেকে দ্রুত চলে যান তিনি।

এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াজেদ আলী সারাবাংলাকে বলেন, শিক্ষার্থীর ওপর পুলিশের হামলার বিষয়টা সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো তথ্য কিংবা অভিযোগ আমরা পাইনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএইচ/এমআই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন