বিজ্ঞাপন

চোখ হারিয়েছে তবে স্বপ্ন থামেনি সিদ্দিকুরের

August 10, 2018 | 12:24 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা:  আন্দোলনের সময় চোখের আলো হারালেও স্বপ্ন দেখা থামেনি সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের। ধীরে ধীরে সেই স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এরই প্রমাণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় চোখ হারানো সিদ্দিকুর প্রথম শ্রেণী সমমানের জিপিএ (৩.০৬) পেয়েছেন।

৯ আগস্ট তার পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সিদ্দিকুরের বন্ধু ফরিদ শেখ সারাবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ফরিদ বলেন, ‘সিদ্দিকুরের এই রেজাল্টে আমরা খুশি। আশা করি ভবিষ্যৎ পরীক্ষাগুলোতেও সে অনেক ভালো করবে। গতকাল রাতে সিদ্দিকুরের বাসায় গিয়েছিলাম। তাকে ফুল দিয়ে আমরা অভিনন্দন জানিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

পরীক্ষার ফলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সিদ্দিকুর বলেন, ‘চোখ হারিয়েছি কিন্তু স্বপ্ন দেখা থামাইনি। এই পরীক্ষা হওয়ার দাবিতে  সেদিন রাজপথে নেমেছিলাম। কিন্তু টিয়ারশেলে চোখ হারাই, কিন্তু কাউকে দোষারোপ করিনি। ভাগ্যকে মেনে নিয়েছিলাম। আমার চোখের আলো নেই তারপরও আমার স্বপ্ন দেখা থামেনি। আগে যে স্বপ্ন দেখতাম এখনও সেই স্বপ্ন দেখি।’

তিনি বলেন, ‘আমার পথচলা থামেনি। আমি বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে চাই, আশা করি সেখানেও সফল হবো। একদিন আমি আমার স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাবই।’

বিজ্ঞাপন

‘পাশে থাকার জন্য গণমাধ্যকর্মী, বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক, চিকিৎসক, সরকার সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই সাদিয়াকে, যে আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। সে সহায়তা করেছে বলেই আমার পরীক্ষাগুলো ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছি। সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

গতবছরের ২০ জুলাই পরীক্ষার রুটিন ও তারিখ ঘোষণাসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন শাহবাগে। সেখানে তাদের অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। টিয়ারশেলে চোখ হারান সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান।

টিয়ারশেলে আহত সিদ্দিকুরকে প্রথমে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ব্যর্থ হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে উন্নত চিকিৎসা জন্য চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে সিদ্দিকুরের চিকিৎসা হয়। কিন্তু সেই চিকিৎসাও তার চোখের আলো ফিরিয়ে দিতে পারেনি। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত বছরের ২ অক্টোর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানিতে টেলিফোন অপারেটর হিসেবে কাজে যোগ দেন।

বিজ্ঞাপন

ওই বছরের নভেম্বরে সিদ্দিকুর শ্রতিলেখকের সাহায্যে পরীক্ষায় অংশ নেন। শ্রুতি লেখক হিসেবে পরীক্ষায় সহযোগিতা করেন একই কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন মৌ।

সারাবাংলা/জেএ/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন