বিজ্ঞাপন

অনিশ্চয়তার মুখে বড়পুকুরিয়ায় নতুন করে কয়লা উত্তোলন কাজ

August 13, 2018 | 2:12 pm

|| ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ||

বিজ্ঞাপন

দিনাজপুর বড়পুরিয়া খনি থেকে কর্তৃপক্ষের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে কয়লা উত্তোলন শুরু করা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। কয়লা উত্তোলনে যেতে আরও সময় লাগবে বলে দাবি করছেন খনি শ্রমিকরা। খনি থেকে কয়লা লোপাটের ঘটনায় চারজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পদ শূন্য হওয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে।

গত ২৭ জুলাই খনি এলাকা পরিদর্শনে এসে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণ উৎপাদনে যাবে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি। এজন্য তিনি চাইনিজ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন।

কিন্তু খনি শ্রমিকরা বলছে, খনির ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন করতে আরও সময় লাগবে। বর্তমানে ভূ-গর্ভে তাপমাত্র স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। এই অবস্থায় শ্রমিকরা ভূ-গর্ভে খুব জোর হলে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি সময় কাজ করলে তাপমাত্রার কারণে শ্রমিকদের অসুস্থ হতে হবে।

বিজ্ঞাপন

খনি শ্রমিক বাবুল হোসেন জানান, ১২১০ নং ফেসের কয়লা উত্তোলন কাজ শেষ হয়ে যায়। ১৩১৪ নং ফেসে নতুন করে যন্ত্রপাতি স্থাপন করে কয়লা উত্তোলন কাজ শুরু করতে আরও সময় লাগবে। ভূ-গর্ভের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাস্তার স্টিলের সাপোর্ট বেঁকে গেছে। বেড়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা। সব মিলিয়ে কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত সময়ে কয়লা উত্তোলন কাজ শুরু সম্ভব নয়।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খনির ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন করতে কাজ করা হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষের সময় অনুযায়ী উত্তোলন কাজ শুরু হবে কিনা তা তিনি বলতে পারছেন না।

শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাবে কিনা সে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কয়লা গায়েবের ঘটনার পর থেকে খনির কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করায় প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যার কারণে বকেয়া রয়েছে বেতন। বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস দিলে শ্রমিকরা আরও উৎসাহের সাথে দ্রুত কাজ করবে। তাই তিনি দ্রুত বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধের দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূ-গর্ভের ১২১০ নং ফেসের কয়লা উত্তোলন কাজ শেষ হয়ে যায়। নতুন ফেসে কয়লা উত্তোলন করতে সময় লাগবে প্রায় তিন মাস। এরই মধ্যে অত্র খনির কয়লা দিয়ে পার্শ্ববর্তী ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা খনির ইয়ার্ডে মজুদ না থাকায় নড়েচড়ে বসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। বন্ধ হয়ে যায় দেশের একমাত্র কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।

হিসেবে দেখা দেয় ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন কয়লা মজুদের গড়মিল। ঘটনায় গঠন হয় তদন্ত কমিটি। দফায় দফায় পরিদর্শন ও ছুটাছুটি শুরু হয় পেট্রোবাংলার। এ ঘটনায় গত ১৯ জুন পার্বতীপুর মডেল থানায় খনির ব্যবস্থাপক(প্রশাসন) আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলার তদন্ত কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।

সারাবাংলা/এমআইআর/এনএইচ

আরও পড়ুন,
বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতির ঘটনায় মামলা

বিজ্ঞাপন

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন