বিজ্ঞাপন

কোটা বাতিলের পক্ষে কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আদালতের সিদ্ধান্ত

August 13, 2018 | 2:15 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল চাইলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা না রাখার বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত চায় উচ্চপর্যায়ে গঠিত কোটা বাতিল, সংস্কার ও পর্যালোচনা কমিটি।

সোমবার ( ১৩ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কমিটি কোটা পদ্ধতি উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে সুপারিশ করেছে। পর্যালোচনা কমিটি মেধাকে প্রাধান্য দিয়েছে।  আমরা চাই, যতদ্রুত সম্ভব কোটা বাদ দিয়ে মেধায় চলে যেতে।’

বিজ্ঞাপন

কোটা বাতিল, সংস্কার ও পর্যালোচনায় গঠিত সাত সদস্যের এ কমিটি তাদের প্রাথমিক মতামতে আরও বলেছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সম্পর্কে আদালতের অবজারভেশন চাওয়া হবে।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা সম্পর্কে সচিব বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে কোর্টের আদেশ আছে, সে অনুযায়ীই তা চলবে।’

পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কোটা সম্পর্কে জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, ‘দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এখন অগ্রসর হয়ে গেছে। তারা আর অনগ্রসর নেই। তাই এ ক্ষেত্রে কোটার দরকার হবে না।’

বিজ্ঞাপন

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চেয়ে ৮ এপ্রিল শাহবাগে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে টিয়ারশেল ছোড়ে পুলিশ। এছাড়া ওই সময় লাঠিচার্জও করা হয়। পুলিশের ধাওয়ায় আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান নেয়। ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। রাতভর পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাসভবনে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

গত ২ জুন সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এই কমিটি করে সরকার। কমিটিতে সাতজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়।

বিজ্ঞাপন

কমিটিকে কমিটি গঠনের দিন থেকে ১৫ কর্মদিবস অর্থাৎ আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ঘোষণার’ ২ মাস ২২ দিন পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা পর্যালোচনায় কমিটি করে।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বলেছিলেন, কোটা পদ্ধতি থাকবে না। এটা বাতিল। একইসঙ্গে ওই দিনই কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও বলেছিলেন, যে কমিটি পরবর্তী সুপারিশ করবে।

তবে এর কয়েকদিন পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখতে হাইকোর্টের রায় আছে। সেটি বাদ দেওয়া সম্ভব নয়।’

কোটা পর্যালোচনা কমিটি গত ৮ জুলাই তাদের প্রথম সভা করে কর্মপন্থা নির্ধারণের পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কোটা সংক্রান্ত দেশি-বিদেশি সব ধরনের তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়।

১৯ জুলাই পর্যালোচনা কমিটির মেয়াদ ৯০ কার্যদিবস বাড়ানো হয়।

এদিকে কোটা আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সাতজনকে বিভিন্ন অভিযোগে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা এখন কারাগারে রয়েছেন।

এরা হলেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, ফারুক হোসেন, এ পি এম সুহেল, তরিকুল ইসলাম, মশিউর রহমান, জসিম উদ্দিন ও রাতুল সরকার।

সারাবাংলা/ এইচএ/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন