বিজ্ঞাপন

‘লুমাকে আইনি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না’

August 17, 2018 | 7:19 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে গুজব সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার লুৎফুন্নাহার লুমাকে আইনি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা।

শুক্রবার (১৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় ক্র্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউল্লাহ।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফুন্নাহার লুমাকে গত ১৫ আগস্ট ভোরে সিরাজগঞ্জের দাদাবাড়ি থেকে তথ্যপ্রযুক্তি মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতারের পর লুমাকে আদালতে নেওয়া হলে ঢাকা মহানগর হাকিম লুমাকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা আতাউল্লাহ বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার কারণেই লুমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। কারণ তাকে যে অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তা সত্য নয়। লুমা গত ৩ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত গোপালগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জে ছিলেন।’

সংবাদ সম্মেলনে এই ছবি সরবরাহ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

গত ৪ আগস্ট রাজধানীর জিগাতলায় নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে বলা হয় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ অফিসে মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছে।

ওই ভিডিও প্রসঙ্গে আতাউল্লাহ বলেন, ‘ভিডিওতে মেয়েটি মুখ ঢেকে বক্তব্য দেওয়ায় পুলিশ তাকে শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়। ভিডিওতে বক্তব্য দেওয়ার সময় ওই মেয়েটির পরনে গোলাপি রংয়ের জামা ছিল। তারও আগে লুৎফুন্নাহার লুমা গোলাপি জামা পরে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে টকশোতে গিয়েছিলেন’ বলেন আতাউল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, সেই গোলাপি জামার সূত্র ধরেই পুলিশ লুমাকে গ্রেফতার করেছে। লুমার নামে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালতেও রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণাদি উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। লুমার একটাই ফেসবুক আইডি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার আর কোনো আইডি নেই। তার কোনো ইউনিউব চ্যানেল নেই, টুইটার অ্যাকাউন্টও নেই।’

কোটা আন্দোলনের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন বলেন, ‘ঈদের আগেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে হবে। ঈদের আগে মুক্তি দেওয়া না হলে সারাদেশের ছাত্র সমাজ এবার কালো ঈদ পালন করবে। ঈদের দিন সবাই কালো পোশাক পরে নামাজ পড়তে যাবে এবং কালো দিবস হিসেবে পালন করবে। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল, তা মেনে নেওয়া না হলে ৩১ আগস্টের পর সারাদেশে কঠোর আন্দোলন শুরু করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে এই ছবি সরবরাহ করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন. ‘প্রয়োজনে কোটা সংস্কারের সরকারি যে কমিটি আছে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসতে পারেন। আমরা কোটার হার যে ১০ শতাংশ বেঁধে দিয়েছি তা কম-বেশি হতে পারে। এছাড়া গ্রেফতার হওয়া সকল শিক্ষার্থীকে মুক্তি দিতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘লুমাকে ন্যূনতম আইনি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আটকের ৩৬ ঘণ্টা পর তাকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। তাকে ওকালতনামায় স্বাক্ষর পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছিল না। বিচারকের সঙ্গে কথা বলার পর স্বাক্ষর নিতে দেওয়া হয়। তার সঙ্গে আইনজীবীকেও পরামর্শ করতে দেওয়া হয়নি। আমরা মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আইনি লড়াইয়ে যাব।’

লুৎফুন্নাহার লুমার মা রাশিদা বলেন, ‘আমার তিন মেয়ে। ইডেন কলেজে পড়ার সময় লুমা কোটা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। মামলা হওয়ার পর সে বাড়িতে যায়। ভয়ে সে ঢাকায় আসত না। এমনকি পরীক্ষাও দিতে আসেনি। গত ১২ আগস্ট পুলিশ যায় গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার জয়নগর এলাকায়। টের পেয়ে পরের দিন লুমাকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে দাদাবাড়িতে রেখে আসে পরিবার। সেখান থেকেই তাকে ১৫ আগস্ট গ্রেফতার করে পুলিশ। লুমা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত ছিল না। আমার মেয়েকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে আমাদের নামে আজেবাজে কথা ছড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে আমার মেয়ে মুফতি হান্নানের ভাগ্নি। মুফতি হান্নান আমার ভাই নয়। আমার বাবার বাড়ি রাজশাহীতে। আমার তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়ভাই ক্যান্সারে মারা গেছে। বাকি দুই ভাই বেঁচে আছেন। আর আমরা পাঁচ বোন। মুফতি হান্নানের ভাগনি লুমা এটা মিথ্যা।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন