বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গাদের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কোরবানি

August 21, 2018 | 2:29 pm

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার: মায়ানমারের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিতেই গতবছরের কোরবানির ঈদটা পার হয়ে গিয়েছিল। বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জীবনে আবারও এসেছে ঈদুল আজহা। আশ্রিত জীবনে ঈদুল আজহা নিশ্চয় তাদের জীবনে বিশেষ কোনো বার্তা নিয়ে আসেনি। তবুও তাদের মাঝে ঈদের আনন্দটুকু সামান্য হলেও পৌঁছে দিতে উদ্যোগের ঘাটতি নেই কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, এক লাখ ৯৫ হাজারের মতো রোহিঙ্গা পরিবার আছে। প্রতি পরিবার যেন অন্তত দুই কেজি করে কোরবানির মাংস পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। এ জন্য এক হাজারের মতো গরু আমরা সংগ্রহ করছি। এনজিও এবং বিত্তবানদের কাছ থেকে এসব গরু সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকারিভাবেও কিছু গরু দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ৩৩ হাজারের মতো নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পরিবার আছে। তাদের অনেকের আত্মীয়স্বজন মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। তারা প্রায় সবাই নিজেরাই কোরবানি দেবেন। গতবছর যারা এসেছেন মূলত এসব পরিবারের মাঝেই আমরা কোরবানির মাংস বিতরণ করব।

বিজ্ঞাপন

এদিকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাংস বিতরণে শৃঙ্খলায় পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে প্রধান করা হয়েছে।

কমিটিতে আরও আছেন- কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা (আরআরআরসি), উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলাপ্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। মাংস বিতরণের নিয়মতান্ত্রিকতা মনিটরিং করবে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে করা এ কমিটি।

এদিকে কোরবানির মাংস বিতরণের খবরে আশ্রিত রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর মাঝে কিছুটা হলেও আনন্দের সঞ্চার হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা বসতির একটি ব্লকের মাঝি (নেতা) নুর কামাল বলেন, নিজের বাড়িভিটা ফেলে আশ্রিতে হয়ে দিন কাটাচ্ছি। বাংলাদেশ সরকার অনেক সাহায্য করছে। আমাদের জীবনে কি আর ঈদের আনন্দ বলে কিছু আসবে? তারপরও সরকার যেটুকু মাংস দেবে, সেগুলো দিয়েই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঈদ করব।

আরেক ব্লকের মাঝি সৈয়দ আলম বলেন, গত বছর তো কোরবানির ঈদ কোন দিক দিয়ে চলে গেছে বুঝতেও পারিনি। বিভিন্ন সময় স্থানীয়রা গরুর মাংস দিয়ে সাহায্য করেছে। এবার আমাদের জন্য আলাদাভাবে কোরবানি হবে বলে শুনছি। এটা ভালো হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ২৯টি সেনা ছাউনিতে হামলার জেরে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। রাখাইন রাজ্যে জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু হয়।রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা, নারীদের গণধর্ষন, বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, শিশুদের অগ্নিকুন্ডলিতে নিক্ষেপ ও রোহিঙ্গা যুবকদের গণগ্রেফতারসহ নানা নিপীড়ন চালায় রাষ্ট্রীয় বাহিনী।

এর ফলে বাস্তুচ্যুত হয়ে রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বান্দরবানের তমব্রু সীমান্ত পার হয়ে পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

বিজ্ঞাপন

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার হিসাবে, বাংলাদেশে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা গতবছর সহিংসতার শিকার হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে সীমান্ত পার হয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত ক্যাম্পে আশ্রয়ে আছে।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন