বিজ্ঞাপন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: বিচারিক আদালতের রায় আগামী মাসেই

August 21, 2018 | 9:08 am

।। আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলাটি বিচারিক আদালতে ঝুলছে ১৪ বছর ধরে। তবে এ মামলার  আসামির পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ অবস্থায় আগামী মাসেই এ মামলার রায় হতে পারে বলে জানিয়েছেন খোদ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

রোববার (১৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লা‌বে ‘২১ আগস্ট গ্রে‌নেড হামলার দ্রুত বিচা‌রে’র দা‌বি‌তে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্ত‌ব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রে‌নেড হামলা হত্যা মামলার বিচারিক আদালতের রায় সেপ্টেম্বর মাসে দেওয়া হবে।

‌তি‌নি আরও ব‌লেন, ‘২১ আগস্ট গ্রে‌নেড হামলার যু‌ক্তিতর্ক প্রায় শেষ পর্যা‌য়ে, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে রায় হ‌বে। এই হত্যা মামলায় ৫২ জন আসামির মধ্যে ১৭ জন পলাতক। শুনানিতে ২২৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বিশেষ আদালতে চলা এই মামলায় এখন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের যুক্তিতর্ক চলছে। এ মাসেই (আগস্ট) তার যুক্তিতর্ক শেষ হবে। এরপরই তা রায়ের জন্য রাখা হবে।’

বিজ্ঞাপন

২০০৪ সালের সেই নির্মম গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ঘাতকদের গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী। এছাড়া গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন দলটির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী।

এ ঘটনায় পরদিন (২২ আগস্ট, ২০০৪) মতিঝিল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। এরপর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগকে। পরে মামলাটির তদন্ত স্থানান্তর করা হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)।

এ মামলার বিচারিক কার্যক্রমে গত ১৪ আগস্ট পঞ্চম দিনের মতো সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। তবে এদিন তা শেষ না হওয়ায় আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ আগস্ট যুক্তি উপস্থাপনের দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ নিয়ে মামলার শুনানিতে ১০৯ দিন যুক্তি উপস্থাপন হয়েছে। শেষ হয়েছে ৪৪ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনও।

বিজ্ঞাপন

আলোচিত এই মামলার প্রসিকিউশনের অন্যতম সদস্য আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল সাংবাদিকদের জানান, মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২। এর মধ্যে তিন জন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন ৪৯ আসামির বিচার চলছে। এর মধ্যে ১৮ জন পলাতক, ২৩ জন হাজতে আছেন। আসামিদের মধ্যে ৪৫ জনের যুক্তিতর্ক পেশ হবে। এরই মধ্যে ৪৪ জনের যুক্তিতর্ক শেষ হয়ে ৪৫তম জনের পক্ষে চলমান রয়েছে।

আদলত সূত্রে জানা গেছে, এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আরও ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে।

এ মামলার জামিনে থাকা আসামিরা হলেন— খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।

অন্যদিকে, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ মামলার ২৩ আসামি কারাগারে আটক আছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৮ জন আসামি পলাতক।

গত ১ জানুয়ারি আইন অনুযায়ী মামলার সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করে।

সারাবাংলা/এআই/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন