বিজ্ঞাপন

আরপিওতে সংযোজন হচ্ছে ইভিএম ব্যবহার

August 25, 2018 | 10:09 am

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পাশাপাশি জাতীয়  সংসদ নির্বাচনেও ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহার করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে জন্য বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নতুন করে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি সংযোজন করতে যাচ্ছে।

এ লক্ষ্যে আগামী রোববার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে ইসির কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় এক নম্বর এজেন্ডা রাখা হয়েছে আরপিও সংশোধনী প্রস্তাবনা। প্রস্তাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিধান যুক্তসহ কয়েকটি বিষয় সংযোজন করা হচ্ছে। এছাড়া আইনটি ইংরেজির পরিবর্তে বাংলা ভাষায় রূপান্তর করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ শুক্রবার (২৪ আগস্ট) সারাবাংলাকে বলেন, ‘আরপিওতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধান রয়েছে। এবার আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহার করার বিষয়টি আরপিওতে সংযোজন করতে চাইছি। রোববার ইসির কমিশন সভায় বিষয়টি এজেন্ডায় রাখা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমি আগে বলেছিলাম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আরপিও সংশোধন হবে না, হচ্ছেও না। আরপিওতে নতুন করে সংযোজন হচ্ছে। সংশোধন আর সংযোজন দুইটি ভিন্ন বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধান রয়েছে। সংসদ নির্বাচনেও যাতে ইভিএম ব্যবহার করা যায় আরপিওতে তা যুক্ত করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইসি কমিশনার ও ইসির আইন সংস্কার কমিটির প্রধান কবিতা খানম শুক্রবার সারাবাংলাকে বলেন, ‘রোববার কমিশন সভায় আরপিও সংশোধনসহ বেশ কয়েকটি এজেন্ডা রাখা হয়েছে। এগুলো কমিশন সভায় পাস হলে তা কার্যকর করা হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর।’

বিজ্ঞাপন

ইসি সূত্র জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে আরপিও সংশোধন চূড়ান্ত করা হবে ইসি থেকে এমন ঘোষণা দিয়েছিল ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। সে জন্য কমিশন থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগও নেওয়া হয়। ইসির কমিশনার কবিতা খানমের নেতৃত্বে এ বিষয়ে ইসির আইন সংস্কার কমিটি গত ১২ এপ্রিল একটি প্রস্তাবনা কমিশনে উত্থাপন করা হয়। কিন্তু  কমিশন তখন প্রস্তাবনাটিতে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠায়। এরপর প্রস্তাবনাটি একপ্রকার আড়ালে চলে যায়।

এ বিষয়ে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সারাবাংলাসহ কয়েকজন সাংবাদিককে তার কার্যালয়ে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আরপিও সংশোধনের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হলে আরপিও সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। যদিও ইসির সংলাপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন দাবি জানানোর পাশাপাশি ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দেন।

ইসি সূত্র জানায়, গত ১৯ আগস্ট হঠাৎ করে আরপিও সংশোধন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইসি কমিশনার কবিতা খানম।

তিনি বলেন, ‘সংসদের আগামী অধিবেশনে আরপিও সংশোধনের বিষয়টি উত্থাপিত হতে পারে। কবিতা খানমের বক্তব্যের পরদিন ২০ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের জরুরি বৈঠকের নোটিশ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

নোটিশে ২৬ আগস্ট সকাল ১০টায় আরপিও সংশোধন করার বিষয়টি কমিশন সভার এক নম্বর এজেন্ডায় রাখা হয়েছে। এছাড়াও প্রস্তবনায় ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিধান যুক্তসহ কয়েকটি বিষয়ে সংশোধনী আনা হচ্ছে।’

ইসি সূত্র জানায়, আগামী নভেম্বর মাসে প্রথম সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে। ইসি চাইছে তার আগে আরপিও সংশোধন। সে লক্ষ্যে ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে এটি পাস করার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে। তবে  সংসদে উথাপনের আগে কমিশনে সংশোধনী প্রস্তাবনা অনুমোদন, আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং এবং পরে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করতে হবে। তবে ইসি ও সরকার চাইলে তা সম্ভব বলেও মনে করছেন ইসির কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ১৯৭২ সালে আরপিও প্রণয়নের পর এখন পর্যন্ত এটি ১১বার সংশোধন করা হয়েছে। এসব সংশোধনীর মাধ্যমে ২০৯টি বিষয় সংযোজন-বিয়োজন করা হয়।

সর্বশেষ ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) সংশোধন আইন ২০১৩ সংসদে পাস হয়। সেখানে নির্বাচনে ব্যয়সীমা ২৫ লাখ টাকায় উন্নীত করা, যুদ্ধপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।’

অন্যদিকে এবার সংশোধনীতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম), অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা, প্রার্থীর জামানত বাড়ানো, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া সহজীকরণসহ ৩৫টি সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে ইসির আইন সংস্কার কমিটি।

এছাড়াও ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা নিয়েও সংশোধনী আনা হচ্ছে।

সারাবাংলা/জিএস/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন