বিজ্ঞাপন

বিমসটেক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায়নি ২০ বছরেও

August 26, 2018 | 8:22 am

এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: উন্নয়নের স্বার্থে বিমসটেককে (বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক ও কারিগরি উন্নয়ন ও সহযোগিতা জোট বা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৭ রাষ্ট্রের জোট) কার্যকর ও উজ্জীবিত করা প্রয়োজন। এ অঞ্চলের উন্নয়নে বিমসটেকের অসম্ভব সম্ভাবনা থাকলেও এখনও কাজে লাগানো যায়নি। আঞ্চলিক এ ফোরামটি ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরুর পর ২০ বছর পার হলেও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কোনো চমক দেখাতে পারেনি।

আগামী ৩০ আগস্ট নেপালের কাঠমানডুতে বিমসটেকের শীর্ষ পর্যায়ের চতুর্থ সম্মেলন শুরু হবে।

গবেষণা ও বিশ্লেষণধর্মী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইস্টএশিয়া ফোরামে ভারতের নয়াদিল্লির আসিয়ান-ইন্ডিয়া সেন্টারের প্রধান অধ্যাপক প্রবীর দে শনিবার (২৫ আগস্ট) ‘বিমসটেককে নতুন উচ্চতায় উঠতে হবে’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞাপন

বিমসটেককে শক্তিশালী পাওয়ার হাউজ উল্লেখ করে ওই প্রতিবেদনে অধ্যাপক প্রবীর দে বলেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং মহাসাগরকেন্দ্রিক যোগাযোগের কারণে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা জোরদারের জন্য বিমসটেক একটি চমৎকার সংস্থা। শুধুই তাই নয় বিমসটেকের ভারত মহাসাগর এবং হিমালয়ের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। এখানে প্রচুর তেল, গ্যাস এবং জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা আছে।

বিগত ২০ বছরেও বিমসটেক এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো এ ফোরামের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারেনি উল্লেখ করে অধ্যাপক প্রবীর দে বলেন, ‘এ অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্যিক উন্নয়নে শুল্ক কোনো বাধা নয় অথচ ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিমসটেকের আন্তঃবাণিজ্যের হার হচ্ছে মাত্র ৭ শতাংশ। এই জোটের রাষ্ট্রগুলো এখনো নিজেদের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে পারেনি। এই জোটের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মানুষে মানুষে সংযোগও সীমিত।’

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী জানান, ২০০৪ সালে বিসমটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে একমতে পৌঁছলেও এখনো এই বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। বিষয়টি দুঃখজনক। এই প্ল্যাটফর্মের সুবিধা নিয়ে বিমসটেকের বর্তমান ৭ শতাংশ আন্তঃবাণিজ্যের হারকে ২১ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আরো সু-সম্পর্ক গড়তে চায় নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার। ভারত চাচ্ছে, আঞ্চলিক নেতৃত্বে তার অবস্থান আরো সুদৃঢ় করতে। বিশেষ করে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সাম্প্রতিককালের সম্পর্কের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখছে ভারত। এই অঞ্চলের চালকের আসনটি অন্য কোনো দেশের হাতে দিতে চায় না মোদি সরকার। এ জন্য ছক কষে এগুচ্ছে ভারত।

সূত্রগুলো আরো বলছে, দক্ষিণ এশিয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) এর বদলে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৭ রাষ্ট্রের বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও কারিগরি উন্নয়ন ও সহযোগিতার আঞ্চলিক জোটকে (বিমসটেক) কার্যকর করতে চাচ্ছে ভারত। ভারতের আপত্তির কারণেই গত ২০১৬ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।

ভারতের অধ্যাপক প্রবীর দে বলেন, গত ২০১৬ সালের অক্টবরে ভারতের গোয়ায় ব্রিকস-বিমসটেক আউটরিচ সম্মেলনে ঝিমিয়ে যাওয়া বিমসটেক কিছুটা উজ্জীবিত হয়েছিল। সামনের দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিক-নির্দেশনা বিমসটেককে নতুন করে জাগাতে পারে।

এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বার্তায় বলেন, বিমসটেকের ২১ বছর উদযাপনে এ অঞ্চলের নেতা এবং নাগরিকদের অভিনন্দন জানাই। আমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতা আরো দৃঢ় এবং জোরদার হবে বলেই বিশ্বাস করি। বিমসটেক এই অঞ্চলের উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে।

বিজ্ঞাপন

আগামী ৩০ এবং ৩১ আগস্ট বিমসটেকের চুতর্থ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া বিমসটেকের বাকি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ডের বর্তমান সরকার প্রধানরা এবারই প্রথমবারের মতো সম্মেলনে অংশ নেবেন।

সর্বশেষ ২০১৪ সালে মার্চে মিয়ারমারের নেপিডোতে তৃতীয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সারাবাংলা/জেআইএল/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন