বিজ্ঞাপন

কেউ যেন সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী

August 28, 2018 | 7:37 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আপানারা এই দেশেরই সন্তান সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে কোন সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প কেউ যেন ছড়াতে না পারে, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় প্রতি মানুষ যেন তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন ও যার যার অধিকার ভোগ করতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থাটাই করতে চেয়েছি।

মঙ্গলবার(২৮ আগস্ট) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে  শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী মহোৎসব উপলক্ষে শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি একথা বলেন।

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে গ্রেনেড হামলার ঘটনার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে গ্রেনেড মারা হয় যুদ্ধের ময়দানে। সেই গ্রেনেড মারা হয়েছিল তখনকার যারা ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট তাদের সম্পূর্ণ পূষ্টপোষকতায়। এছাড়া কোনদিন এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না।

বিজ্ঞাপন

শুধু এই ঘটনা নয় ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা বলেন, এমন কোন হিন্দুবাড়ি ছিল না যেখানে আক্রমণ না করেছে। তারা কোনকিছুই বাদ দেয়নি। তারা সকলের উপরেই আক্রমণ চালিয়েছে। বিশেষ করে হিন্দুদের উপর বেশী করে অত্যাচার করেছে। ঠিক একইভাবে ৯২ সালে বাবরি মসজিদে যখন হামলা হয় তখনও এখানে হিন্দুদের উপর অকথ্য অত্যাচার হয়েছিল সেই কথাও তুলে ধরেন।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মাদক-অস্ত্র’ এগুলো যেন একটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি, এই দেশে শান্তি যেন বজায় থাকে। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ অর্থ্যাৎ সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প যেন ছড়াতে না পারে, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় যেন বাংলাদেশ গড়ে ওঠে। আর প্রত্যেকটি ধর্মের মানুষ তার ধর্ম যেন স্বাধীনভাবে উদযাপন করতে পারে এবং একটা সুন্দর পরিবেশে যেন এই ধর্ম পালন করতে পারে।’

প্রতি বছরেই পূজার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

‘আমরা সবসময় এটাই চেষ্টা করি, সেটা হিন্দু ধর্ম হোক, খ্রিস্টান ধর্ম হোক, বৌদ্ধ ধর্ম হোক বা আমাদের মুসলমান ধর্ম হোক; প্রত্যেকটা উৎসব যেন একটা আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপিত হোক। কারণ আমাদের স্লোগানই হচ্ছে ধর্ম যার যার উৎসব সবার এবং এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের সব থেকে সৌন্দর্য

প্রত্যেকটি ধর্মীয় উৎসবে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলেই কিন্তু এক হয়ে উৎসব উদযাপন করে, এই এরকম সুন্দর একটা পরিবেশ আমরা বাংলাদেশে সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি।

আমরা সেটাই চাই দাবি করে শেখ হাসিনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, আপানারা এই দেশেরই মানুষ। এই দেশেরই সন্তান। এই দেশ আপনাদের। মহান মুক্তিযুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। শহীদের রক্ত তো কোন বাধা মানেনি। কে হিন্দু কে মুসলমান, কে খ্রিস্টান, কে বৌদ্ধ, সেটা দেখেনি। সেই রক্ত একাকার হয়ে গেছে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি।

‘কাজেই এই স্বাধীন বাংলাদেশ, এ বাংলাদেশে কোন সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প যেন ছড়াতে না পারে, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় প্রতি মানুষ যেন তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে এবং যার যার অধিকার যেন সবাই ভোগ করতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থাটাই করতে চেয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কাজইে এই দেশ সকল ধর্মের মানুষের জন্য। এখানে সুন্দরভাবে বসবাস করা, প্রত্যেকেরই আর্থসামাজিক উন্নতি,সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

দেশী-বিদেশী নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সব ধর্মের মানুষ এখানে আত্মসম্মান ও সমান অধিকার নিয়ে বাঁচবে। সরকার সেই পরিস্থিতি বজায় রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়াও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অর্পিত সম্পত্তি বিরোধ নিস্পত্তিতে সরকার আন্তরিক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ক্ষমতাসীন সরকার মসজিদভিত্তিক শিক্ষার ব্যবস্থার পাশাপাশি মন্দিরভিত্তিক শিশু শিক্ষার ব্যবস্থাও করছে সেই দিকটিও তুলে ধরেন তিনি।

সারাবাংলা/এনআর/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন