বিজ্ঞাপন

‘গুমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরাসরি জড়িত’

August 30, 2018 | 6:47 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রাষ্ট্রের দায়িত্ব যেখানে জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া, সেখানেই রাষ্ট্রীয় বাহিনীই নাগরিকদের গুম করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরাসরি জড়িত থাকায় তারা মামলাও নেয় না। সংবিধান আইনের শাসনের ভার রাষ্ট্রের হাতে দিলেও এক্ষেত্রে রাষ্ট্র নিজেই সে আইন ভঙ্গ করছে। ঐক্যবদ্ধভাবে এ সন্ত্রাস মোকাবিলা না করলে কেউই এর থেকে রক্ষা পাবে না।

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) ‘আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা। ওই সমাবেশে বর্তমান সরকারের আমলে গুমের শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাদের হাতে গুম হওয়া স্বজনদের ছবি, ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন দেখা যায়।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন তেজগাঁও থেকে নিখোঁজ বিএনপি নেতা মো. সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা বেগম। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কমরেড সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের চেয়ারম্যান সি আর আবরার।

বিজ্ঞাপন

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে গুমগুলো হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোই রাজনৈতিক। মানুষকে দু’ভাবে মারা যায়; মনোবল ভেঙে দিয়ে তাকে মানসিকভাবে দমিয়ে রাখা এবং তাকে ভয়ের মধ্যে রাখা। এভাবে ভয়ের সংস্কৃতি চালু করতে পারলে লাভ সরকারেরই।’

তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরে দেশে একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনের আগে সরকার কোনো ফরিয়াদই আমলে নেবে না। তাই এ নির্বাচনে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেন স্বৈরাচার ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না আসতে পারে। আবার ভোটের পরেও খেয়াল রাখতে হবে যেন অন্য কেউ ক্ষমতায় এলেও আবার স্বৈরাচারী না হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

কমরেড সাইফুল হক বলেন, গুম-খুন নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ক্রমাগত মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে তাদের কোনো সত্য কথাও এখন আর জনগণ বিশ্বাস করতে পারছে না।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশে যদি আরেকটা প্রহসনের নির্বাচন না চান, তবে গুমের শিকার ব্যক্তিদের তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিন। কোথায়, কখন কিভাবে দেবেন সেটা আপনারাই ঠিক করুন। দয়া করে এসব স্বজনহারাদের প্রতি আর অবিচার করবেন না।

জোনায়েদ সাকী বলেন, গুমের রাজ্যে প্রতিদিনই আমরা নানাভাবে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। রাষ্ট্রীয় এ অপরাধ বন্ধে রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্থান প্রয়োজন। আগামী নির্বাচনে আমাদের সেটিই নির্ধারণ করতে হবে।

অধিকারের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যদি সামান্যতম শ্রদ্ধা থাকে, এসব গুমের অবসান হওয়া উচিত। রাষ্ট্র কেবল ক্ষমতাশালীদের জন্য নয়, এ রাষ্ট্র ক্ষমতাহীনদেরও।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশের শেষে গুমের শিকার সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের কোনো অপরাধ নেই। আমরা এ জন্য কাউকে দোষারোপও করব না। দয়া করে সন্তানদের ফেরত দিন।’

এসময় হাজেরা খাতুনসহ অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সারাবাংলা/এমএস/এমও/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন