বিজ্ঞাপন

এ বিমানে কি লন্ডন যেতে পারব?

September 5, 2018 | 10:55 pm

।। জাকিয়া আহমেদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: কিছুক্ষণ আগেই একটি কেক কেটেছেন, তারপর তার সামনে নিয়ে আসা হলো বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার আকাশবীণার রেপ্লিকা। রেপ্লিকাটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলেন তিনি, তারপর স্বলাভসুলভ হাসিমুখে বললেন, আমি একটি বিমান পেলাম, এ বিমানে কি লন্ডন যেতে পারবো-এ সময় সংবাদ সম্মেলনে থাকা প্রতিটি মানুষ তার সঙ্গে হেসে ওঠেন-ঘটনাটি দুপুরের, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে। আর যিনি আমি একটি বিমান পেলাম, এ বিমানে কি লন্ডন যেতে পারব বলে প্রশ্ন করেন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার ( ৫ সেপ্টেম্বর) এ প্রজন্মের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বিলিত বোয়েং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের উদ্বোধন করতে এসে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ড্রিমলাইনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তারপর ড্রিমলাইনেরর ককপিটে, কেবিনে ঘুরে দেখতে যান।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তেব্যে বলেন, ‘আমি চাই, বিমানের সঙ্গে যারা কর্মরত প্রত্যেকে আন্তরিকতার  সঙ্গে কাজ করবেন। যেন আমাদের কোনো বদনাম না হয়। যেন আমাদের দেশের সুনাম হয়।’ এসময় তিনি বিমানের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সবসময় খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান বিমান কর্তৃপক্ষের প্রতি।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই বিমানবহরে যখনই নতুন বিমান এসেছে আমি চেষ্টা করেছি নতুন নতুন সুন্দর সুন্দর নাম দিতে। কারণ আমাদের দেশটাকে তুলে ধরতে হবে। এটা শুধু আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নয়। কারণ এটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতায়াত করে। কাজেই বিমানে যারা কাজ করবেন বা বিমানে যারা যাতায়াত করবেন বা বিমানে দেশি-বিদেশি প্যাসেঞ্জার যারা উঠবেন, তাদের জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ দরকার।’

আগে উড়োজাহাজে উঠতে গেলে হেটে উঠতে হতো মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কার পার্কিং, বোর্ডি ব্রিজসহ বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন আওয়ামী লীগ আমলে করা হয়েছে। বিমানবালাদের পোশাক-পরিচ্ছেদও পরিবর্তন এনেছেন বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর পোশাকের যে ডিজাইন ছিল, ওটাই কিন্তু চলছিল। সেখানে আমরা কিছু পরিবর্তন নিয়ে এসে নতুন রং নতুন নতুন সময়োপযোগী পোশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। দেশটাকে তুলে ধরতে হবে, সুন্দর পরিবেশ দরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

বিমান বহরে আগামীতে আরও উড়োজাহাজ যোগ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরেকটা ড্রিমলাইনার চলে আসবে নভেম্বর মাসে। ইতোমধ্যে আমাদের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তখন হয়ত আর আসা সম্ভব হবে না। তবে আমি চাচ্ছি, এটা খুব দ্রুত এসে যাক এবং তার কাজ শুরু করুক। তারও একটা সুন্দর নাম দিয়েছি, এখন আর বলতে চাই না। যখন সময় হবে তখন জেনে নেবেন। এ ছাড়াও কানাডার সাথে চুক্তি করেছি, এতে আমাদের অভ্যন্তরীণ এবং আঞ্চলিক যোগাযোগটা আরও বৃদ্ধি করতে পারবো বলেও উল্লেখ করেন।’

চলতি বছরের হজ ফ্লাইট সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, কোন কোন সরকার তো আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যা হোক, একটা প্রত্যাহার করেছে। কারণ আমাদের নিরাপত্তা বিষয়টা এখন উন্নত হয়েছে। আমি চাই, বিমানের সঙ্গে যারা কর্মরত প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। যেন কোনো বদনাম না হয়। আমাদের দেশের যেন সুনাম হয়।

তিনি বলেন, আমরা নৌ, সড়ক এবং আকাশ পথ যেন উন্নত হয় সেদিকে কাজ করছি। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে উন্নত করতে যাচ্ছি যেন এখানে রিফুয়েলিং করা যায়, সৈয়দপুর, সিলেট, চট্রগ্রাম বিমান বন্দরকে উন্নত করবো। দক্ষিণাঞ্চলে একটি বিমানবন্দর দরকার মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য বাগেরহাটে বিমানবন্দর করা হবে। রাজশাহী-বরিশালে চালু রয়েছে বিমানবন্দর।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ভাষণে সেই অমোঘ বাক্য ‘কেউ দাবায়ে রাখতা পারবা না’ উচ্চারণ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইনশাল্লাহ কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। সেইভাবেই আমরা আমাদের পরিকল্পনাও করে দিচ্ছি। যেন এই বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে।’

এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন শেখ হাসিনা।

পরে প্রধানমন্ত্রী ড্রিমলাইনারের সামনে ফিতা কাটেন এবং ড্রিমলাইনারের ভেতরে গিয়ে পাইলটদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় ককপিটে ছিলেন বিমানে চিফ অব ফ্লাইট সেফটি ক্যাপ্টেন শোয়েব চৌধুরী ও ফার্স্ট অফিসার মুনজেরিন রায়ান।

এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল, সচিব মহীবুল হক, বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী ও বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাদ্দিক আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

সারাবাংলা/জেএ/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন