বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঘৃণা ছড়ানোর অস্ত্র ছিল ফেসবুক

September 15, 2018 | 9:39 am

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ১৮টি অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি ৫২টি ফেসবুক পেজ স্থায়ীভাবে মুছে ফেলেছে ফেসবুক। জাতিগত বিদ্বেষ আর হেট স্পিচ ছড়ানোর অভিযোগ ছিল এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজের বিরুদ্ধে। যে তীব্র নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে হয়েছে, তার পেছনেও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এসব বিদ্বেষের ভূমিকা রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে রোহিঙ্গাদের অবজ্ঞা ও ঘৃণার চোখে যেভাবে দেখে আসছে সেখানকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ, সেটাই ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

এত কিছুর পরও ‘ঘৃণা ছড়ায়’ এমন পোস্ট চিহ্নিত করা সহজ হচ্ছে না ফেসবুকের জন্য। জাতিসংঘ এরইমধ্যে জানিয়েছে, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়াতে ফেসবুকই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করছে! এ বিষয়ে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দূত ইয়াংহি লি বলেছেন, ‘আমি ভীতির সঙ্গে বলছি ফেসবুক দানবীয় হয়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি যা চেয়েছিলো এখন আর তা নেই।’

তবে, ফেসবুকও নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করেছে ও সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু কীভাবে উন্মুক্ত ও যোগাযোগমুখী চিন্তা-ভাবনার ফেসবুক এমন ভুল পথে পরিচালিত হলো?

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, জাতিগত বিরোধ, হেট স্পিচ, ফেসবুক,

মিয়ানমারে ফেসবুকের ব্যবহার যেভাবে শুরু

মিয়ানমারে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর মাঝে মিত্রতা তৈরির চেষ্টা করে এমন একটি সংগঠন সিনার্জির পরিচালক সোই উইন বলেন, এখন সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। পাঁচ বছর আগে বিষয়টি কিন্তু এমন ছিল না।

বিজ্ঞাপন

মিয়ানমারে সামরিক শাসনামলে বহির্বিশ্বের প্রভাব খুব কমই দেশটিতে পড়েছে। কিন্তু দেশটির গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সুচির মুক্তি ও ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেতা হিসেবে মিয়ানমারের শাসনক্ষমতায় আবির্ভাবে বদলাতে শুরু করে পরিস্থিতি। মিয়ানমার সরকার বিভিন্ন ব্যবসা ক্ষেত্রে, বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ সেক্টরে সুযোগ সৃষ্টি করে। এর ফলাফল অপ্র্যাত্যাশিত ও অবাক করার মতো ছিলে বলে জানান বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন তহবিলের কর্মকর্তা এলিজাবেথ মেয়ার্নস।

মেয়ার্নস বলেন, মিয়ানমারে সেনা শাসনামলে একটা মোবাইল সিমের দাম ছিল ২০০ ডলার। ২০১৩ সালের পর মোবাইল সিম কিনতে পাওয় যেত ২ ডলারে। মোবাইল ও ইন্টারনেট হঠাৎ অবিশ্বাস্য রকমের সহজলভ্য হয়েছিল সবার জন্য। অর্থাৎ দেশটির নাগরিকরা একটি সুলভ ফোন কিনতে থাকে, সেই সঙ্গে সস্তায় পাচ্ছে মোবাইল সিম কার্ড।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, জাতিগত বিরোধ, হেট স্পিচ, ফেসবুক,

ফেসবুকে আসক্তি কেন?

বিজ্ঞাপন

এর উত্তরটা হচ্ছে, গুগুল ও অন্যান্য বড় বড় অনলাইন পোর্টালগুলোতে বার্মিজ ভাষা ব্যবহারের বেশি সুবিধা ছিল না। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মিয়ানমারের নাগরিকদের মাতৃভাষায় অনলাইন ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছিল।

এলিজাবেথ মেয়ার্নস আরও বলেন, ইন্টারনেটে ব্যবহার করা যাবে এমন মোবাইল ডিভাইস কিনতে সবাই হুমড়ি খেয়ে দোকানে যেতে শুরু করে এবং তাদের মোবাইলে ফেসবুক অ্যাপ ইনস্টল হওয়া ছাড়া দোকান থেকে বেরুতো না। ফেসবুকের প্রতি এমনই ঝোঁক ছিল তাদের।

অতঃপর, ইন্টারনেট ব্যবহারে অভিজ্ঞতার অভাব থাকায় মিয়ানমারের নাগরিকরা সহজেই মিথ্যা তথ্য ও প্রপাগান্ডা ছড়ানোয় জড়িয়ে পড়ে। যেটাকে বলা যায় অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী।

থেট সুই উইন নামের এক মিয়ানমারের নাগরিক বলেন, আমাদের এখানে ‘ইন্টারনেট ব্যবহারে’ সুশিক্ষার অভাব আছে। তাই মিথ্যা ও প্রপাগান্ডা যাচাই-বাছাইয়ে এখানকার ফেসবুক ব্যবহারকারীরা খুব নড়বড়ে।

সুই উইন আরও বলেন, সঠিকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার, সংবাদ বাছাই এসব বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার কোনো সুযোগ এখানে নেই।

অস্ত্র হিসেবে ফেসবুককে ব্যবহার

মিয়ানমারের পাঁচ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে আনুমানিক ১ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করেন। কিন্তু আগেই বলা হয়েছে, ফেসবুক ও অন্যান্য টেলিকম অপারেটররা দেশটিতে বিদ্যমান এই ধর্মীয় উদ্বেগের সময় পর্যবেক্ষণ পরিচালনায় যথেষ্ট নন।

জাতিসংঘ বলছে, বার্মিজ সেনাদের নির্যাতনের মুখে দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ৭ লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজার হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় কেন্দ্রস্থল। মিয়ানমারে শাসনে থাকা উচ্চমার্গীয় বৌদ্ধরা রাখাইন রোহিঙ্গাদের ‘তাদের ও স্থানীয়’ বলে মেনে নিতে রাজি নন। তারা প্রভাবিত করতে পেরেছেন দেশটির নাগরিকদের। সুতরাং সংকট সমাধান হচ্ছে না এবং অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেসবুককে।

‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণার চর্চা ও এমন বিশৃঙ্খলা ফেসবুকে মিয়ানমারের প্রবেশের শুরু থেকেই হয়ে আসছে। থেট সুই উইন এ সম্পর্কে বলেন, ফেসবুককে রোহিঙ্গাদের বিপক্ষে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রয়টার্সের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বার্মিজ ভাষায় যেসব ফেসবুক পোস্ট ও পর্নোগ্রাফি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলো সহিংসতা ও উস্কানিতে প্রভাব রেখেছে।

রয়টার্সের তদন্তকারী রিপোর্টার স্টিভ স্টেকলো বলেন, বার্মিজ ভাষায় করা কিছু কিছু ছবি ও পোস্ট ছিলো প্রচণ্ড মাত্রায় সহিংস। আমার পড়তে পড়তে অসুস্থ লাগছিল। আশেপাশের সবাই জানতে চেয়েছিল, তুমি কি ঠিক আছো? বিশ্রাম নিতে চাও?

তিনি আরও বলেন, আমি যখন ফেসবুকে এ বিষয়ে মেইল করি তখন সতর্কবার্তা পাই। ছবিগুলো আমাকে অপ্রকাশযোগ্য বলে সতর্ক করা হয়। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে, ফেসবুকের সার্ভারে এসব সহিংস পোস্ট গত পাঁচ বছর ধরে ছিলো কিন্তু আমরা তাদের নোটিশ পাঠানোর আগ পর্যন্ত এসব তারা সরায়নি।

ওখানের বেশির ভাগ পোস্টে রোহিঙ্গাদের কুকুর ও শুয়োর এসব শব্দে ডাকা হয়। তাদের মানুষ বলে ভাবা হয় না, বলেন স্কেটলো।

ফেসবুক কেন নড়েচড়ে বসেনি!

রয়টার্সের অনুসন্ধানকারী দলটি যেসব ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পায়, সেসব নিঃসন্দেহে ফেসবুকের নীতিমালা লঙ্ঘন করছে। ফেসবুকের নীতিমালায় স্পষ্ট করে বলা আছে ব্যবহারকারীরা কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না।

রয়টার্সের তদন্তের পর সেসব আপত্তিকর ফেসবুক পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে বলা হলেও বিবিসি এখনও সেসব পোস্টের কিছু কিছু খুঁজে পায়।

প্রশ্ন হলো কেন ফেসবুক এ ধরনের ঘৃণ্য বিষয় চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হলো? এ বিষয়ে মেয়ার্নস, স্টেকলো ও অন্যান্যরা বলেন, বার্মিজ ভাষার শব্দের অর্থ বুঝতে বেগ পেতে হয়েছে ফেসবুককে। এ ছাড়া সফটওয়্যারের ত্রুটির কারণে মিয়ানমারের মোবাইল ফোনগুলোতে ফেসবুকের নির্দেশনা পড়া সহজ হয় না। তাই তারা ‘আপত্তিকর পোস্ট’ রিপোর্ট করা বিষয়েও সচেতন নন।

আরও একটি অন্যতম কারণ হলো, বার্মিজ ভাষায় ফেসবুক কনটেন্ট মনিটরিং টিমেরও সদস্য সংখ্যা কম। ২০১৪ সালে মাত্র ১ জন বার্মিজ ভাষার কনটেন্টগুলো মনিটরিং করত। পরবর্তীকালে তা বাড়িয়ে চার জন করা হয়। এরপর তা বাড়িয়ে ৬০ জন করা হলেও এ বছরের শেষে এই সংখ্যা ১০০ করার চিন্তা করছে ফেসবুক।

অনেকেই সতর্ক করেছিল ফেসবুককে

মিয়ানমারে ‘হেট স্পিচ’ বৃদ্ধির বিষয়ে শুরু থেকেই ফেসবুককে সতর্ক করা হয়েছিল। তবে সেসবে কর্ণপাত করেনি কোম্পানিটি। ২০১৩ সালে, অস্ট্রেলিয়ার নির্মাতা এলা ক্যাল্লান ফেসবুককে এ বিষয়ে জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেন। তার পরের বছর ম্যাট শিচেয়ার নামক এক শিক্ষার্থীও এ বিষয়ে ফেসবুক কর্মকর্তাদের বেশ কিছু তথ্য আদান-প্রদান করেন। তখন ফেসবুক ‘কিছু তথ্য’ সরিয়ে ফেলে। এমনকি ২০১৫ সালে উদ্যেক্তা ডেভিড ম্যাডেন ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেসবুকের সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন এবং ফেসবুকে ‘হেট স্পিচের’ বিষয়ে একটি প্রেজেন্টশনও তুলে ধরেন। ম্যাডেন রয়টার্সকে বলেন, তাদের অনেকবার সতর্ক করা হয়েছে, হয়তো এর চেয়ে ভালো করে তাদের বুঝানো যায়নি এবং তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, জাতিগত বিরোধ, হেট স্পিচ, ফেসবুক,

ফেসবুক থেকে অ্যাকাউন্ট বাতিল ও ধীর প্রক্রিয়ার কথা স্বীকার

প্রবল সমালোচনা ও চাপের মুখে ফেসবুকের হুঁশ ফেরে। ফেসবুক ‘হেট স্পিচের’ বিষয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে। চলতি বছরের অগাস্টে মিয়ানমারে অফিসিয়াল ১৮টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ৫২টি ফেসবুক পেজ নীতিমালা বিরোধী কাজে যুক্ত থাকার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টগুলোও মুছে ফেলা হয়। উল্লেখ্য, প্রায় ১২ মিলিয়ন লোক ওই অ্যাকাউন্টগুলো অনুসরণ করতো বলে জানায় ফেসবুক। বন্ধ করা অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে দেশটির সেনা প্রধান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কট্টরপন্থী বৌদ্ধ ভিক্ষুও রয়েছেন।

ফেসবুক এক বিবৃতিতে স্বীকার করেছে, ‘মিয়ানমারে ভুল তথ্য ও ঘৃণা ছড়ানোর বিষয়’ তাদের নজড়ে আসতে অনেক দেরি হয়েছে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নতুন হওয়া অনভিজ্ঞতাবশত মিয়ানমারের নাগরিকরা ঘৃণা ছাড়ানোতে আগ্রহী হয়েছিল।

এ ছাড়া, ‘হেট স্পিচ’ আলোচনায় আসে এ বছর সেপ্টেম্বরের, যখন ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গকে মার্কিন সিনেটের মুখোমুখি হতে হয়। সে সময় শেরিল বলেন, ‘ঘৃণা আমাদের নীতির বিরুদ্ধে। এগুলো অপসারণে আমার গুরুতর পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা নাগরিকদের অধিকারের বিষয়েও সচেতন।

এ ছাড়া ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকেও কংগ্রেসে মিয়ানমারের ‘হেট স্পিচ’ ইস্যুতে প্রশ্ন করা হয়। তখন জাকারবার্গ বার্মিজ ভাষা জানা আরও লোক তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওবার কথা বলেন। স্থানীয়ভাবে সাহায্য নিয়ে বিষয়টির সুরাহা করা যাতে করা যায় ও ভবিষ্যতে অন্যকোনো দেশে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে দৃষ্টি দেবেন বলেও জানান জাকারবার্গ।

এলিজাবেথ মিয়ার্নস বলেন, মিয়ানমার ঘটনায় ফেসবুকের ভূমিকা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তদন্ত প্রয়োজন। এটি শুধুমাত্র একটি উদাহরণ।

তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত অর্থে এখন এমন এক অবস্থায় আছি যেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরাসরি মানুষের ব্যক্তি জীবনে প্রভাব রাখে। এটি ভোটে ভূমিকা রাখে, একজন আরেক জনের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করবে সে বিষয়ে ভূমিকা রাখে। এটি সহিংসতা ও দ্বন্দ্ব তৈরি করে।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, জাতিগত বিরোধ, হেট স্পিচ, ফেসবুক,

মিয়ার্নস আরও বলে, আন্তর্জাতিক মহল বুঝতে পারছে। এখন পদক্ষেপ নেওয়া ও প্রযুক্তিকে বোঝা উচিত। বোঝা উচিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি ঘটছে? কি ঘটছে অন্যান্য দেশগুলোতে!

(বিবিসি অবলম্বনে)

সারাবাংলা/এনএইচ/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন